ফাইল চিত্র।
অগস্টে আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান। আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম স্বীকৃতি মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে দিতে বলে বুধবার আহ্বান জানালেন অন্তর্বতী সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ। পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি— শুধু এই তিনটি রাষ্ট্র আগের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় থাকাকালীন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালিবান সন্ত্রাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নজির দেখেছে সারা বিশ্ব। ফের ক্ষমতা দখল করলেও এ বার এখনও পর্যন্ত তালিবান সরকারকে কোনও দেশই স্বীকৃতি দেয়নি।
আফগানিস্তানের ৮০ শতাংশ মানুষ এখনও দারিদ্রসীমার নীচে। আগের আমেরিকা-সমর্থিত সরকারের আমলে প্রায় পুরোটাই চলত বিদেশি সাহায্যে ভর করে। তালিবান নতুন করে ক্ষমতা দখলের পরে পশ্চিমের দেশগুলি থেকে সাহায্য আসা বন্ধ। বিদেশে গচ্ছিত সম্পদে হাত দেওয়ার ব্যাপারেও রাশ টানা হয়েছে। চাকরি নেই। প্রচুর সরকারি কর্মী মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। রাষ্ট্রপুঞ্জ সতর্ক করেছে, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক খাদ্যসঙ্কটের খাঁড়ার সামনে রয়েছে।
নতুন করে ক্ষমতা দখল করে কিছুটা নরম সুরে কথা বলেছিল তালিবান। যদিও সারবত্তা যে বিশেষ বদলায়নি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা স্পষ্ট। মহিলাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কাপড়ের দোকানে মডেল-পুতুলের মুখও যারপরনাই ঢাকা-চাপা থাকছে। আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা সংক্রান্ত একটি বৈঠকে বুধবার কাবুলে আখুন্দ বলেন, ‘‘আমাদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকেই প্রথম এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। তার পরে, আশা করি দ্রুত উঠে দাঁড়াতে পারব। আমরা এটা শাসনকর্তাদের জন্য চাইছি না, সাধারণ মানুষের জন্যই চাই।’’
আফগানিস্তানের ‘অন্তর্বতী সরকার’-এর অনেক মাথাই আন্তর্জাতিক নিষিদ্ধ-তালিকায় রয়েছেন। তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টা আখুন্দের উপরেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এই অবস্থায়, সরকারের নড়চড় না করে অর্থনীতির চোট সারানোর জন্য ত্রাণ ফেরাতে সূক্ষ্ম কূটনীতির খেলা চলছে।
গত মাসে ৫৭ সদস্যের অর্গানাইজ়েশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) একটি বৈঠকে তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করা হয়। অনুষ্ঠানে তোলা সরকারি ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয় নতুন সরকারের বিদেশমন্ত্রীকে। তবে আফগানিস্তানের জমে থাকা কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ ছাড়ানোর ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছে ওআইসি। বর্তমান শাসকদের বলেছে, মেয়েদের অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি মেনে চলতে।