সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মিত্র দেশ রাশিয়া এবং ইরানের সহায়তাতেও বিদ্রোহী জোটকে রুখতে পারলেন না সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো দখলের পরে এ বার আর এক জনপদ হামা দখল করে নিল দুই বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী।
রাজধানী দামাস্কাসমুখী প্রধান সড়কের উপরের হামার অবস্থান। ফলে সামরিক অবস্থানগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই শহর। বিদ্রোহীদের কব্জায় চলে আসায় আসাদের ক্ষমতায় টিকে থাকা নিয়ে আরও সংশয় তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে। আসাদ-অনুগত সেনাদের সাহায্য করতে মিলিশিয়া বাহিনী পাঠিয়েছিল প্রতিবেশী ইরান। অগ্রবর্তী বিদ্রোহী বাহিনীকে নিশানা করে ক্রমাগত বিমান হামলা চালিয়েছে রুশ যুদ্ধবিমান। তবু হামার পতন ঠেকানো সম্ভব হল না।
এইচটিএস কমান্ডার আবু মহম্মদ আল-গোলানির বাহিনীর এই অগ্রগতি শেষ পর্যন্ত রাজধানী দামাস্কাসে পৌঁছে যেতে পারে বলে গত এক সপ্তাহের যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকে। কারণ, হামা দখলে আসায় দেশের উত্তর অংশের সঙ্গে আসাদ বাহিনীর যোগাযোগ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ল। বিদ্রোহী নেতা গোলানি এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, জোলানি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘‘৪০ বছর ধরে সিরিয়ার যে ক্ষত, তা দূর করতে হামা দখল আমাদের যোদ্ধাদের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’’ সেই সঙ্গে আসাদকে সামরিক সাহায্য না পাঠানোর জন্য পড়শি দেশ ইরাকের সরকার এবং শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলিকে বার্তা দিয়েছেন তিনি।
ইরানের মদতপুষ্ট লিবিয়ার শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা অবশ্য প্রকাশ্যে আসাদ সরকারের সমর্থনে গেরিলা বাহিনী পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে। প্রসঙ্গত, এইচটিএস-এর আগে নাম ছিল নুসরা ফ্রন্ট। আমেরিকা, রাশিয়া-সহ আরও বেশ কিছু দেশ এই সুন্নি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ বলে চিহ্নিত করেছে। তুরস্কের মদতেপুষ্ট আসাদ-বিরোধী বাহিনী সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ) ভেঙেই তৈরি হয়েছে এই গোষ্ঠী। অন্য দিকে, ‘জইশ আল-ইজ্জা’র সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের। ওই যৌথবাহিনীকে তুরস্ক মদত দিচ্ছে বলে আসাদ সরকারের অভিযোগ।