উদ্ধার হওয়া সেই টুকরো। ছবি: এএফপি।
ভারত মহাসাগরের বুকে একটি বিন্দুর মতো দ্বীপ। নাম রিইউনিয়ন। মাদাগাসকার-এর ৬০০ কিলোমিটার পূর্বে ফ্রান্সের অধিকারে থাকা এই রিইউনিয়ন দ্বীপেই ভেসে এসেছে বিমানের ডানার একটি ধ্বংসাবশেষ। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। ধ্বংসাবশেষটি কি মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমান এমএইচ-৩৭০-এর অংশ? এখনও নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রাথমিক ভাবে ধ্বংসাবশেষটি কোনও বোয়িং ৭৭৭ বিমানেরই বলে মনে হচ্ছে। মালয়েশিয়ার প্রশাসন এই নিয়ে গুজব ছড়াতে বারণ করেছে। আপাতত ধ্বংসাবশেষটি ফ্রান্সের বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী সংস্থার অধীনে রয়েছে। চিন সরকারও এ বিষয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
২০১৪-র ৮ মার্চ ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে কুয়ালা লামপুর থেকে বেজিং যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের এমএইচ-৩৭০ বিমানটি। বিমানটি থেকে উপগ্রহে পাঠানো সঙ্কেত বিশ্লেষণ করে দেখা যায় বিমানটির শেষ অবস্থান ছিল দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে। পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ যৌথ ভাবে এই বোয়িং ৭৭৭ বিমানটির সন্ধানে নামে। অস্ট্রেলিয়া এই তল্লাশি অভিযানে নেতৃত্ব দেয়। কিন্তু বিমানটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার রিইউনিয়ন-এর উপকূলে কোনও বিমানের ভাঙা ডানা ভেসে আসে। অংশটি দেখামাত্র স্থানীয় মৎস্যজীবীরা প্রশাসনের কাছে খবর দেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে অংশটি কোনও বোয়িং ৭৭৭-এরই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা অংশটি পরীক্ষা না-করা পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। বিমানের যে কোনও অংশের সিরিয়াল নম্বর থাকে। সেই সিরিয়াল নম্বরটি জানতে পারলে, এটি কোন বিমানের অংশ তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব।
দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের যে অংশে এখন খোঁজ চলছে তার থেকে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার দূরে রিইউনিয়ন দ্বীপ। সমুদ্রের স্রোতের অভিমুখ বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিমানের ধ্বংসাবশেষ-এর পক্ষে এই বিপুল দূরত্ব অতিক্রম করা সম্ভব। ধ্বংসাবশেষটি পরীক্ষা করলে এটি কত দিন সেটি সমুদ্রে ছিল তা-ও বলা সম্ভব। এটি জানতে পারলেও ধ্বংসাবশেষটি নিখোঁজ বিমানের অংশ কি না সেই সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
খবরটি জানাজানি হওয়ার পরে মালয়েশিয়া ও চিন সরকারের পক্ষ থেকে ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এই বিমানের অধিকাংশ যাত্রী ছিলেন চিনের নাগরিক। ফলে খবর আসার পরেই তৎপর হয়েছে চিন। প্রশাসন সূত্রে খবর, ফ্রান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। নিখোঁজ যাত্রীদের আত্মীয়েরাও বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে চিন ও মালয়েশীয় সরকারকে অনুরোধ করেছে।