তাইওয়ানে আছড়ে পড়তে চলেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মেরান্তি। আবহাওয়াবিদদের মতে এ বছরের সব চেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে এটি। দক্ষিণ তাইওয়ান ও চিন জুড়ে ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে কড়া সতর্কতা।
যে কোনও ফর্মুলা ওয়ান রেসিং গাড়ির চেয়েও দ্রুতবেগে তাইওয়ানের দিকে এগিয়ে আসছে ওই ঘূর্ণিঝড়। আবহবিদরা জানিয়েছেন, ঘণ্টায় ২৩০ মাইল বেগে ধেয়ে আসছে মেরান্তি। ইতিমধ্যেই তাইওয়ান ও চিনের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। গাছ পড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টিতে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের জখম হওয়ার খবর মিলেছে।
তাইওয়ানের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, কাওস্লাং ও হুয়ালিয়েন-সহ দক্ষিণ ও পূর্বের শহরগুলিতে সব চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে মেরান্তি। প্রবল ঝড় ও
বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
পরিস্থিতির মোকাবিলায় কোমর বেঁধেছে তাইওয়ান প্রশাসন। বাসিন্দাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার লোককে ইতিমধ্যেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাইওয়ানের কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানো না গেলেও তা কম করার জন্য যথাযথ চেষ্টা করবে প্রশাসন। কাওস্লাং-সহ বেশ কিছু শহরের স্কুল, কলেজ, অফিস বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ৩৭০টিরও বেশি অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উড়ান। বাতিল করা হয়েছে ট্রেনও। পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রায় চার হাজার পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
দক্ষিণ চিন প্রদেশের গুয়াংডাং ও ফুজিয়ান এলাকায় বৃহস্পতিবার আছড়ে পড়বে এই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়। ২০০৯ সালে তাইওয়ানে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় মোরাকোট। তাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্ততপক্ষে ৭০০ জন। তাই এ বার আর কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে আগেভাগেই বিপর্যয় মোকাবিলায় কোমড় বাঁধছে তাইওয়ান।