কোনওটির বয়স ৫ কোটি বছর, কোনওটি ৮ কোটি। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে অদ্ভুত কিছু জীবাশ্ম উদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আর্কেওসেটি: ১৯০২ সালে মিশরের সাহারা মরুভূমিতে জীবাশ্মটি উদ্ধার হয়। ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এই তিমির দেখা মিলত ৩ কোটি ৭০ লক্ষ বছর আগে। মেসোজোয়িক যুগে সাহারা মরুভূমির এই অংশটিতে টেথিস সাগর ছিল। ক্রিটাসিয়াস যুগে অতলান্তিক ও ভারত মহাসাগরের সৃষ্টির ফলে টেথিস সাগর শুকিয়ে যায়। বহু সামুদ্রিক জীব মারা পড়ে। আর্কেওসেটি ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম।
নোডোসর: ২০১১-য় কানাডার এক খনিতে কাজ করার সময় এই প্রাণীর জীবাশ্মটি দেখতে পান কর্মীরা। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রাণীটি অ্যাঙ্কিলোসরিয়ান পরিবারের। এদের শরীরের উপর একটা পুরু বর্ম ছিল। এরা শাকাহারী। প্রায় ১৪০০ কেজি এবং ১৮ ফুট দৈর্ঘ্যের এই প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল জুরাসিক ও ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষের দিকে। রয়্যাল টাইরেল মিউজিয়ামে জীবাশ্মটি রাখা আছে।
ফাইটিং ডাইনোসরস: ১৯৭১-এ মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমিতে ৮ কোটি বছর আগের দু’টি লড়াইরত ডাইনোসরের জীবাশ্ম উদ্ধার হয়। এখনও পর্যন্ত পাওয়া জীবাশ্মগুলির মধ্যে এটাই সেরা মনে করা হয়। জীবাশ্মে দেখা যাচ্ছে ভেলোসিরাপটর ও প্রোটোসিরাপটর পরস্পরকে আক্রমণ করছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা ভেজা বালিয়াড়িতে লড়াই করার সময় বালি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়।
মেগালোসরাস বাকল্যান্ডি: এরাই বিশ্বের প্রথম ডাইনোসরাস। এরা মাংসাশী। প্রায় ১৭ কোটি বছর আগে এদের অস্তিত্ব ছিল। ডাইনোসর প্রজাতির মধ্যে সেরা শিকারি ছিল এরা। এক একটার উচ্চতা ছিল ৩০ ফুটের মতো। অক্সফোর্ডশায়ারের স্টোনসফিল্ডের কাছে মেগালোসরাসের চোয়ালের জীবাশ্ম উদ্ধার হয় ২০০ বছর আগে।
আপল্যান্ড মোয়া: ৩০ বছর আগে নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট ওয়েনে অভিযানে গিয়েছিলেন এক দল প্রত্নতাত্ত্বিক। বড় বড় নখ সমেত দানবাকৃতি একটি কাটা পা দেখতে পান। তাতে চামড়া, মাংস সবই অক্ষত ছিল। সেটা পরীক্ষার পর প্রত্নতাত্ত্বিকরা চমকে ওঠেন। ওই পা’টি ৩ হাজার ৩০০ বছর পূর্বের বিশালাকায় পাখির। নিউজিল্যান্ডেই এদের দেখা যেত। ১৫০০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায় এরা।
লিরারাপ্যাক্স: অদ্ভুত এই সামুদ্রিক প্রাণীটির জীবাশ্ম উদ্ধার হয় চিনে। ৫০ কোটি বছর আগে এই প্রাণীটির অস্তিত্ব ছিল। এদের আকার হত ১৫ সেন্টিমিটারের মতো।
এরিসম্যাটোপটেরাস লিভাটাস: প্রায় ৫ কোটি বছর আগে এই মাছের অস্তিত্ব ছিল। কলোরাডোর গ্রিন নদী থেকে ২৫৯টি মাছের ঝাঁকের একটি জীবাশ্ম উদ্ধার হয়। খুব ছোট আকারের সেই মাছগুলোর জীবাশ্ম থেকে গবেষকদের অনুমান, বড় কোনও শিকারের হাত থেকে বাঁচার জন্য এরা পালানোর চেষ্টা করছিল।