ফাইল চিত্র।
মধ্যরাত থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রতিবাদে দেশ জুড়ে ধর্মঘটের দিনেই এই সিদ্ধান্ত নিল শ্রীলঙ্কা সরকার। ১ এপ্রিলের পর আবারও ওই দ্বীপরাষ্ট্রে দ্বিতীয় বার এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে।
অর্থনৈতিক সঙ্কটে রাজাপক্ষ সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল শ্রীলঙ্কা। শুক্রবার সকাল থেকে দেশ জুড়েই শুরু হয়েছে ধর্মঘট। কর্মবিরতি পালন করছেন পড়ুয়ারা-সহ ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ। শুক্রবার সকালে পড়ুয়ারা পার্লামেন্টে ঢোকার চেষ্টাও করেন। কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান ছুড়ে তাঁদের নিরস্ত করে শ্রীলঙ্কার পুলিশ।
১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এতটা দুর্দশার পরিস্থিতি কখনও দেখা যায়নি। চরম আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা দ্বীপরাষ্ট্রকে ইতিমধ্যেই ‘অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া’ বলে ঘোষণা করেছে গোতাবায়া সরকার।
আন্তর্জাতিক ঋণ এবং সুদ মেটাতে চলতি বছরের মধ্যে অন্তত ৬৯০ কোটি ডলার (প্রায় ৫২,৪০০ কোটি টাকা) ব্যয় করার কথা শ্রীলঙ্কার। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে জ্বালানী, কৃষিক্ষেত্রে সারের মতো একাধিক পণ্যের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাসের পর মাস দেশে এই অবস্থার বিরুদ্ধে শুক্রবার সকাল থেকেই দেশ জুড়ে নতুন করে সরকার বিরোধী প্রদর্শন করে শ্রীলঙ্কার আমজনতা। ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে ধর্মঘটে শামিল হয়ে কলকারখানায় লক্ষ লক্ষ কর্মী কাজে যোগ দেননি। কলকারখানায় কালো পতাকাও ঝুলিয়ে দিয়েছেন অনেকে। গণপরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা শুক্রবারের ধর্মঘট সমর্থন করেছেন। এর জেরে বন্ধ ছিল ট্রেন-বাসের মতো পরিষেবা। সে দেশের এই ট্রে়ড ইউনিয়ন নেতা রবি কুমুদেশের দাবি, ‘‘প্রেসিডেন্টের যে সমস্ত নীতি রূপায়ণের জেরে শ্রীলঙ্কায় এই অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তা প্রতিটি উল্লেখ করতে পারি।’’
রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে মাসখানেক ধরেই তাঁর কার্যালয়ের বাইরে শিবির গড়ে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বহু প্রতিবাদী। তবে এই বিক্ষোভের মাঝে অন়ড় রয়েছেন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। নিজের পদ থেকে ইস্তফায় নারাজ তিনি।