(বাঁ দিকে) রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। নমল রাজাপক্ষে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা সজিথ প্রেমদাসা এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের পুত্র নমল, বামজোটের নেতা অনুরাকুমার দিশানায়েক-সহ মোট ৩৮ জন প্রার্থী। শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। সন্ধ্যায় ভোটের পালা শেষ হলেই শুরু হবে গণনা।
শ্রীলঙ্কায় গত কয়েক বছরে যে আর্থিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে, সেই আবহে এটিই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে প্রথম বার এমন আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে কার্যত দেউলিয়া হয়ে যায় তারা। সেই আর্থিক সঙ্কটের আবহে ২০২২ সালে পতন হয় রাজাপক্ষে পরিবারের। জনবিক্ষোভের জেরে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে এবং তাঁর ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটাভুটিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন রনিল।
সেই রাজাপক্ষে পরিবারেরই ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টায়। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাজাপক্ষে পরিবারের নমল। নমল লড়ছেন শ্রীলঙ্কান পডুজন পেরামুনা (এসএলপিপি) দল থেকে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর আর এক কাকা বাসিল রাজাপক্ষে। বিরোধী দলনেতা সাজিথের লড়ছেন সমগী জন বলওয়েগা (এসজেবি) দলের হয়ে। তাঁর বাবা রণসিঙ্ঘেও ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। তামিল জঙ্গিগোষ্ঠী এলটিটিইর হামলার নিহত হয়েছিলেন তিনি।
ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা অনুরার পাশাপাশি ২০২২ সালে রাজাপক্ষে বিরোধী গণবিক্ষোভের অন্যতম মুখ নুয়ান বোপেজ পিপল্স স্ট্রাগল অ্যালায়েন্স দলের তরফে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন। লড়াইয়ে রয়েছেন, প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শরথ ফনসেকা এবং বৌদ্ধদের রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)-এর প্রধান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিজয়দশা রাজাপক্ষে। শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে গেলে এক জন প্রার্থীকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফা (রান-অফ) নির্বাচন হবে। তবে শেষ পর্যন্ত কুশলী রাজনীতিক রনিলের জয়ের সম্ভাবনা বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে।