তিন নেতার লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটার লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। কার সরকার দেশ চালাবে, তা নিয়ে জট বরং বেড়েই চলেছে। আজ পার্লামেন্ট বসেছিল সমাধান সূত্র খুঁজতে। কিন্তু পার্লামেন্টের কাজকর্ম কী ভাবে এগোবে, তা নিয়ে একমত হতে পারেননি এমপি-রা। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। আগামী শুক্রবার ফের পার্লামেন্টের অধিবেশন বসার কথা।
খাতায়-কলমে দেশের প্রধানমন্ত্রী এখন মাহিন্দা রাজাপক্ষ। কিন্তু ইতিমধ্যেই দু’বার অনাস্থা ভোটে হেরেছে তাঁর সরকার। এ দিকে বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে এখনও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে যাননি। তাঁর দলের দাবি, মাহিন্দাকে সরকারি অর্থ জোগানো বন্ধ হোক।
মাহিন্দা প্রথম অনাস্থা ভোটে হেরেছেন ধ্বনি ভোটে। সে বার তাঁর দলের লোকেরা পার্লামেন্ট ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বারের অনাস্থা ভোটেও হেরেছেন তিনি। সে দিন তাঁর দলের এমপি-রা তাণ্ডব চালান পার্লামেন্টে। ছোড়েন লঙ্কার গুঁড়ো। সেই ভোটাভুটি বাতিল করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা। তিনিই রনিল বিক্রমসিংহের সরকারকে বরখাস্ত করে কুর্সিতে বসিয়েছেন মাহিন্দাকে। তাঁর পক্ষে গরিষ্ঠতা নেই বুঝে প্রথমে পার্লামেন্ট স্থগিত করে ও পরে তা ভেঙে দিয়ে ৫ জানুয়ারি ভোট করানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলি এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায়। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থগিতদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। আর তার পরেই দু’-দু’বার অনাস্থা ভোটে হেরেছেন মাহিন্দা। গত কাল রাতে সব দলের নেতারা সিরিসেনার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজনৈতিক সঙ্কটমুক্তির পথ খুঁজতে। কিন্তু বৈঠক মাঝপথে ভেস্তে যায়। তখনকার মতো ঠিক হয়েছিল, আজ পার্লামেন্টে বসলে সব পক্ষের এমপি-রা একটি সিলেক্ট কমিটি গড়বেন। ওই কমিটির কথা মতো এগোবে পার্লামেন্টে কাজকর্ম। কিন্তু পাঁচ মিনিটেই অধিবেশন ভন্ডুল হয়ে যাওয়ায় দ্বীপরাষ্ট্রে অচলাবস্থা কাটানোর সমাধানসূত্র অধরাই রয়ে গিয়েছে। মাহিন্দা সরকারকে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ জোগানো বন্ধের প্রস্তাব নিয়ে অাগামী দিনে আলোচনা হওয়ার কথা পার্লামেন্টে। তা নিয়েও হাঙ্গামার আশঙ্কা করছেন রাজনীতিকরা। মাহিন্দা ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছিলেন পুলিশ প্রধান। তদন্ত থেকে সরিয়ে তাঁকে বদলি করার নির্দেশ জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট।