অধিকার: কাজে ফেরার দাবিতে পথে নামলেন আফগান মহিলারা। রবিবার কাবুলে। রয়টার্স।
ক্রমে জোরদার হচ্ছে তালিবানের পঞ্জশির দখলের দাবি। তালিবান-বিরোধী ‘ন্যাশনাল রেজ়িসট্যান্স ফোর্সেস’ (এনআরএফ)-এর নেতা আহমেদ মাসুদ কিংবা আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেই চলেছেন। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায় ক্রমশ মনে করা হচ্ছে, আফগানিস্তানের একমাত্র তালিবান-মুক্ত প্রদেশটিও দখল হয়ে গিয়েছে।
পঞ্জশিরের বাসিন্দা আব্দুল ওয়াজিদের বর্ণনা, সেপ্টেম্বরে উপত্যকায় প্রবেশ করেছে তালিবান বাহিনী। তিনি বলেন, ‘‘ওরা সংখ্যায় অনেক ছিল। কারও কিছু করার ছিল না।’’ এক দিকে তালিবান সংখ্যায় ভারী, অন্য দিকে এনআরএফের অস্ত্রের ভাঁড়ার শেষ। ওয়াজিদের বাড়ি খেঞ্জ গ্রামে। তিনি জানান, গ্রামের লোকজন ও এনআরএফ— একত্রে ‘পঞ্জশির যোদ্ধা’রা তিন দিন ধরে তালিবানকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিল। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল পুরনো সরকারের যে সামান্য সেনাবাহিনী অক্ষত রয়েছে, তারাও। কিন্তু সকলে মিলেও তালিবানকে আটকানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ওয়াজিদ। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র। আফগান বাহিনীর সমস্ত অস্ত্র এখন ওদের হাতে। আমরা দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কী করব, মাথায় আসছিল না।’’
মালাসপা নামে পঞ্জশিরের আর এক গ্রামের বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সি খোল মহম্মদ বলেন, ‘‘বিশাল কনভয়। হাজার হাজার গাড়িতে তালিবান ভর্তি।’’ পঞ্জশিরের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ৬ সেপ্টেম্বর পঞ্জশিরের রাজধানী বাজ়ারাকের দখল নেয় তালিবান। আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে সব কিছুই চলছে তালিবানি ফতোয়া মেনে। পেশরুর গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা খের মহম্মদ জানিয়েছেন, তাঁর সোভিয়েত আগ্রাসনের কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘হুবহু এক পরিস্থিতি। সে সময়ে এ ভাবেই ওরা এসে বলেছিল, আমরা বন্ধু হতে পারি? জবাবে আমরা বলেছিলাম অবশ্যই। তার পর কী হয়েছিল, সবাই জানে।’’ স্মিত হাসি বৃদ্ধের মুখে।