মস্কোর তরফে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা ক্ষেত্রে একে অপরের প্রতি সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে। ছবি টুইটার
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের মস্কো সফর নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। মঙ্গলবার তিনি রাশিয়ায় পা রেখেছেন, কিন্তু সে কথা প্রাথমিক ভাবে সংবাদমাধ্যমের কাছে ঘোষণা করা হয়নি। গত কাল রাশিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিকোলাইন পাট্রুশেভের সঙ্গে বৈঠক করেন ডোভাল। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে জোর দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক ও গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে এর মধ্যেই জোরদার জল্পনা— রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ভারত মধ্যস্থতা করে থাকতে পারে। তবে কোনও দেশের পক্ষ থেকেই এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
মস্কোর তরফে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা ক্ষেত্রে একে অপরের প্রতি সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়েও কথা হয়েছে দু’দেশের। মস্কো তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘রাশিয়া ও ভারতের বিশেষ কৌশলগত জোট আরও মজবুত করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ভবিষ্যতে দু’দেশের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ায় সহমত দু’পক্ষই।’’
সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়া-ভারত বন্ধুত্ব নিয়ে বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে দিল্লিকে। ইউক্রেনে আগ্রাসন নিয়ে কেন রাশিয়ার বিরোধিতা করছে না ভারত, তোলা হচ্ছে সেই প্রশ্ন। আমেরিকা এ নিয়ে দিল্লির উপরে চাপ বাড়ালেও কোনও লাভ হয়নি। ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বর্তমান রাশিয়া সফর প্রসঙ্গে আমেরিকা এ দিন জানিয়েছে, ভারত-রাশিয়া দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। রাশিয়ার বিষয়ে তাদের বিদেশ নীতি রাতারাতি বদলে ফেলা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘‘অন্য কোনও দেশের বিদেশ নীতি সম্পর্কে বলা আমার কাজ নয়। কিন্তু ভারতের থেকে আমরা কী জানতে পেরেছি, সেটা অবশ্যই আমি জানাতে পারি। অনেক দেশই রাষ্ট্রপুঞ্জের ভোটে রুশ আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু ওদের কয়েক দশকের সম্পর্ক। এটা তো কোনও লাইটের সুইচ নয়, যে বন্ধ করে দিলেই হল!’’
এ দিকে, আজও প্রাণহানি ঘটেছে ইউক্রেনে। রাশিয়ার গোলাবর্ষণে খারকিভে ৪ বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। অন্তত ২০ জন জখম। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান আজ ইউক্রেনে গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন। সমুদ্রপথে শস্যদানা রফতানি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া জ়াপোরিজিয়ার পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তা, কূটনৈতিক পথে যুদ্ধের সমাধান— এ সব নিয়েও কথা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।