ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সংলগ্ন একটি টিলার মাথায় এ বার আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার হদিশ পেল পুলিশের বিশেষ শাখা র্যাব। সোমবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে ওই কারখানার খোঁজ পাওয়া যায়। সেখান থেকে ১০টি তৈরি হয়ে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্র, বন্দুক তৈরির বেশ কিছু সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার করা হয় তিন রোহিঙ্গাকে।
পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর মদতে পুষ্ট জঙ্গি সংগঠন আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে সম্প্রতি খুনোখুনি শুরু করেছে। বাংলাদেশ সরকার যদিও প্রথম থেকেই তাদের উপস্থিতির বিষয়ে নীরবতা নিয়ে চলেছে। কিন্তু মাস খানেক আগে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে প্রচার চালানো মানবাধিকার কর্মী মুহিবুল্লাকে তাঁর দফতরের মধ্যে গুলি করে খুন করা হয়। ধরা পড়া এক আততায়ী পুলিশ ও আদলতকে জানায়, মায়ানমার থেকে আরসা-র শীর্য নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী মুহিবুল্লাকে খুন করা হয়েছে। কারণ রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ফিরুক, আরসা চাইছে না। এর পরে রোহিঙ্গা শিবিরে একটি মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ৬ জনকে খুনের কাজও আরসা-র বলে জানতে পারে পুলিশ। সম্প্রতি আরসা-র ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ মোহাম্মদ হাসিমের দেহ মেলে শিবিরের মধ্যে। আগে থেকেই প্রায় ৪ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারে ছিল। ২০১৭-য় আরও ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমার থেকে আসার পরে কক্সবাজার এখন বিশ্বের সব চেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে পর্যবসিত হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত দু’বছর ধরে রোহিঙ্গাদের কিছু গোষ্ঠী মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে মাদক, সোনা এবং অস্ত্র চোরাচালান করছে। কিন্তু শিবিরের পাশেই যে তারা বন্দুক তৈরির কারখানা গড়ে ফেলেছিল, ধারণাই করতে পারেনি পুলিশ।
সোমবার ভোরে র্যাবের টহলদারেরা ওই পাহাড়ের কাছাকাছি পৌঁছলে তাদের দিকে গুলি ছুটে আসে। এর পরে বড় দল সেখানে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান শুরু করলে বেশ কয়েক জন পালিয়ে যায়। পুলিশ নতুন তৈরি একটি ঘরের হদিশ পায়। সেখানে ঢুকে দেখা যায় সে’টি বন্দুক তৈরির কারখানা। র্যাবের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “ধৃত তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখানে তৈরি বন্দুক কাদের কাছে যেত, কোন জঙ্গি সংগঠন এই অস্ত্র কারখানার সঙ্গে যুক্ত— সবই জানা গিয়েছে।”