এক দশকের পুরনো খোঁজ শেষ? ছবি— সংগৃহীত।
সালভাদোর দালিকে কবর খুঁড়ে তুলে এনেছিলেন। দাবি ছিল, তিনি স্পেনের এই বিশ্বখ্যাত পরাবাস্তববাদী চিত্রশিল্পীর মেয়ে। প্রায় এক দশক ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলেন মাদ্রিদের মারিয়া পিলার আবেল মারটিনেজ।
৬১ বছরের বৃদ্ধার সমস্ত আবেদন খারিজ করে দিয়েছে স্পেনের একটি আদালত। রায়ে আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষায় এমন কিছু মেলেনি, যা থেকে প্রমাণ হয় প্রয়াত চিত্রশিল্পী সালভাদোর দালি মারিয়ার বাবা। সিএনএন-এর খবর অনুযায়ী, দালি ফাউন্ডেশনের তরফে আদালতের এমন সিদ্ধান্তের খবর ঘোষণা করা হয়েছে।
যদিও আবেদনকারী মারিয়ার আইনজীবী এনরিক ব্ল্যাঙ্কেস জানিয়েছেন, ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আদালতের এই রায় তাঁরা মেনে নিতে বাধ্য না।
২০০৭ থেকে মারিয়া পিলার আবেল মারটিনেজ এই আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর দাবি, তিনিই সালভাদোর দালির মেয়ে। কারণ, স্পেনের পোর্ট লিগাতে থাকার সময় তাঁর মায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল দালির।
এক বার একটি সাক্ষাত্কারে মারিয়া জানিয়েছিলেন, ১৯৫৬ সালে জিরোনাতে জন্ম হয়েছিল তাঁর। সেই সময় মারিয়ার মা আন্তোনিয়া কাদাকুয়েস একটি পরিবারে পরিচারিকার কাজ করতেন। সেই বাড়ির পাশের বাড়িটিই ছিল সালভাদোর দালির। ওই কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য শহরে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন তাঁর মা।
আরও পড়ুন, রবারের হাঁস চুরির শাস্তি জেল, সঙ্গে বিপুল জরিমানা!
আরও পড়ুন, নিজেদের নামের জন্যই মুষড়ে পড়লেন এই দম্পতি
কিন্তু পরে আন্তোনিয়া নাকি অনেকবার মারিয়াকে বলেছিলেন, দালিই তাঁর আসল বাবা। শোনা যায়, আন্তোনিয়ার সঙ্গে প্রেমের সময় দালি বিবাহিতও ছিলেন। তাঁর স্ত্রী-র নাম এলেনা ইভনোভনা দিয়াকোনোভা। যাঁকে গালা নামেই সবাই চেনে। দালির চিত্রকর্মে বেশ কয়েক বার মডেল হয়েছেন গালা।
দম্পতি। স্ত্রী গালার সঙ্গে দালি। ছবি— সংগৃহীত।
১৯৮৯ সালে ৮৪ বছর বয়সে মারা যান সালভাদোর দালি। এর পর পিতৃ পরিচয় এবং সম্পত্তি পেতে আদালতে আবেদন করেন মারিয়া। যদিও প্রথম দিকে আদালত তা খারিজ করে দিয়েছিল। পাশাপাশি, দালি ফাউন্ডেশনের তরফেও মারিয়ার এই যুক্তি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তবে চলতি বছর ফের এই আইনি শুনানির মাঝেই মারিয়ার আবেদনে সাড়া দিয়েছিল স্পেনের একটি আদালত। গত ২০ জুলাই সালভাদোর দালির কবর খুঁড়ে শিল্পীর দাঁত ও চুলের নমুনাও সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। তারই রিপোর্ট গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে ডিএনএ পরীক্ষার পর মারিয়া দালির মেয়ে প্রমাণ হওয়ার মতো কোনও কিছুই পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আদালত।