বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন শাহবুদ্দীন চুপ্পু। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন শাহবুদ্দীন চুপ্পু। যাঁকে রাজনৈতিক মহলে সকলে ‘চুপ্পুভাই’ বলেই চেনেন। রবিবার সকালে বাংলাদেশ সরকার শাহবুদ্দীনের নাম নতুন রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন শাহবুদ্দীন।
প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধা তথা বর্ষীয়ান রাজনীতিক শাহবুদ্দীন আপাতত বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লিগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি একই সঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতি। একটা সময়ে ‘দুদক’-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। শাহবুদ্দীনকে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসাবে মনোনীত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় প্রার্থী হিসাবে রবিবার শাহবুদ্দীনের নাম নির্বাচন কমিশনে দাখিল করেন আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রবীণ রাজনীতিক শাহবুদ্দীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ‘আস্থাভাজন’ বলেই পরিচিত। গত বছর তাঁকে আওয়ামী লিগের প্রচার এবং প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনীত করেছিলেন হাসিনা।
চলতি বছরের শেষে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। সে দিক থেকে দেশের রাষ্ট্রপতি পদটি গুরুত্ব এবং তাৎপর্যের বিচারে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। তাদের শাসনকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হলেও ক্ষমতাসীন হাসিনা সরকার আগামী নির্বাচনে যাবে খানিকটা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা নিয়েই। বিরোধী পক্ষ গত নির্বাচনেই আওয়ামী লিগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছিল। এ বারেও তারা ‘নিরপেক্ষ এবং তদারকি সরকার’-এর অধীনে নির্বাচন করানোর দাবি তুলেছে। বিরোধী বিএনপির দাবি, হাসিনার সরকার ভোটের ছ’মাস আগে পদত্যাগ করুক। তার পর ভোট হোক ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে। হাসিনা সেই দাবি মেনে নেবেন— এমন কোনও সম্ভাবনা এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হলে তখনও রাষ্ট্রপতির ভূমিকা দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সেই প্রেক্ষিতে শাহবুদ্দীনের মনোনয়ন ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে শাহবুদ্দীন সম্পর্কে বলা হয়, তিনি আওয়ামী লিগের সর্বময় নেত্রী তথা প্রধানমন্ত্রীর ‘আস্থাভাজন’ তো বটেই, প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। প্রাক্তন বিচারপতি হওয়ায় আইন এবং সংবিধান সম্পর্কেও শাহবুদ্দীনের সম্যক অভিজ্ঞতা রয়েছে।
যে হেতু বাংলাদেশের সংসদে আওয়ামী লিগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, তাই তাদের মনোনীত প্রার্থী শাহবুদ্দীনই নিশ্চিত ভাবে ২২তম রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসছেন। নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি মনোনয়নের দিন শাসকদলের নেতৃবৃন্দ গণভবনে আওয়ামী লিগ সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সভানেত্রী প্রতিনিধি দলকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত ব্যক্তির নাম জানান। পরে দলের সাধারণ সম্পাদক আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই নাম ঘোষণা করেন। তার পর গণভবন থেকে প্রতিনিধি দলটি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন রবিবারই। এখনও পর্যন্ত খবর, এই পদের প্রার্থী হিসাবে আর কেউ মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন না। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই জিততে চলেছেন শাহবুদ্দীন। যদি এর মধ্যে আর কেউ মনোনয়ন জমা দেন, তা হলেও শাহবুদ্দীনের জয় নিয়ে কোনও পক্ষেই কোনও সংশয় নেই।