Myanmar Earthquake

মায়ানমারে মৃত ১০০০ ছাড়াল! ১০ ঘণ্টায় ১৪টি ‘আফটারশক’, ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ভারত থেকে গেল বিমান

শুক্রবার সকাল থেকে পর পর ১৫ বার কেঁপেছে মায়ানমারের মাটি। রিখটার স্কেলে প্রথম কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। মায়ানমারের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৮
Share:
মায়ানমারে ভূমিকম্পে বহু বহুতল ভেঙে পড়েছে, চলছে উদ্ধারকাজ।

মায়ানমারে ভূমিকম্পে বহু বহুতল ভেঙে পড়েছে, চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।

মায়ানমারে ভূমিকম্পের কারণে মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে গেল। শনিবার সকালে সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছিল, অন্তত ৬৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ভূমিকম্পের কারণে। আহতের সংখ্যা ১৬৭০। পরে মায়ানমারের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানায়, মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১০০২। আহত হয়েছেন ২,৩৭৬ জন। নিখোঁজ ৩০ জন। এখনও দেশের বিস্তীর্ণ অংশে উদ্ধারকাজ চলছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই কঠিন সময়ে অন্যান্য দেশের কাছে সাহায্য চেয়েছে মায়ানমার। ভারত থেকে ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে শনিবার সকালেই মায়ানমারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বিমান।

Advertisement
মায়ানমারের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ভারত থেকে যাচ্ছে বিমান।

মায়ানমারের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ভারত থেকে যাচ্ছে বিমান। ছবি: এক্স।

শুক্রবার সকাল থেকে পর পর ১৫ বার কেঁপেছে ভারতের পূর্ব দিকের প্রতিবেশী দেশটির মাটি। রিখটার স্কেলে প্রথম কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। তার পরে ১০ ঘণ্টার মধ্যে ১৪টি ‘আফটারশক’ (ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পন) অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্প তছনছ করে দিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পরে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সবচেয়ে শক্তিশালী ‘আফটারশক’টি হয়। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৬.৭। উভয়ক্ষেত্রেই কম্পনের উৎসস্থল ছিল মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। এই দুই কম্পনে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পর বাকি ‘আফটারশক’গুলি আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১১.৫৬ মিনিটেও এক বার ভূমিকম্প হয়েছে মায়ানমারে। তার তীব্রতা ছিল ৪.২। ‘আফটারশক’গুলি উদ্ধারকাজকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

মায়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রতিবেশী তাইল্যান্ডও। সেখানকার রাজধানী শহর ব্যাঙ্ককে নির্মীয়মাণ ৩০ তলা ভবন ভেঙে পড়েছে জোরালো কম্পনের ফলে। সেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবারই মায়ানমার এবং তাইল্যান্ডের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, সাধ্যমতো সমস্ত সাহায্য করতে প্রস্তুত ভারত। এ বিষয়ে তিনি বিদেশ মন্ত্রককে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছিলেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শনিবার ভোরে উত্তরপ্রদেশের হিন্ডন বায়ুসেনা স্টেশন থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার সি১৩০জে বিমান মায়ানমারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। তাতে অন্তত ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী রয়েছে। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মায়ানমারে পাঠানো হয়েছে খাবার, কম্বল, তাঁবু, ঘুমানোর সামগ্রী (স্লিপিং ব্যাগ), সোলার ল্যাম্প, জল পরিশোধক এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র।

Advertisement

ভূমিকম্পে মায়ানমারে দু’টি সেতু ভেঙে গিয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছিল সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। মান্দালয় শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে একটি মসজিদ ভেঙে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ভেঙেছে একাধিক বাড়ি। রাতে জুন্টা প্রধান মিন আং লাইং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক এলাকায় এখনও বাড়ি ভেঙে পড়ে রয়েছে। উদ্ধারকাজ চলছে। আমরা সাধ্যমতো উদ্ধারকাজ চালাচ্ছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্যও আবেদন জানাচ্ছি।’’ গৃহযুদ্ধে দীর্ণ মায়ানমারের বিস্তীর্ণ এলাকা জুন্টা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেই সমস্ত এলাকায় ভূমিকম্পের ফলে কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। দেশের অন্তত ছ’টি প্রদেশে শুক্রবার জরুরি অবস্থা জারি করেছে জুন্টা সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement