শেখ হাসিনা।
ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে এই প্রথম সরাসরি মুখ খুললেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান থেকে অত্যাচারের শিকার হয়ে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারত নাগরিকত্ব দেবে বলে এই আইনে বলা হয়েছে। আজ একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে হাসিনা বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি না, ভারত কেন এটা করল? এটার কোনও প্রয়োজনই ছিল না।’’ তবে এটি যে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তা-ও এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন হাসিনা। পাশাপাশি, সিএএ-এনআরসি আতঙ্কে ভারত থেকে বহু লোক বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছে বলে যে-প্রচার চলছে, তা-ও সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী।
রবিবার এক সংবাদমাধ্যমকে হাসিনা বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সব সময়েই মনে করে, সিএএ-এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকারও সেটাই মনে করে। ২০১৯-এর অক্টোবরে আমার দিল্লি সফরের সময়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে সেই আশ্বাস দিয়েছিলেন।’’ মোদীর আশ্বাসে তিনি নিশ্চিন্ত কি না, জানতে চাইলে হাসিনা বলেন, ‘‘অবশ্যই।’’ তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে নয়াদিল্লি-ঢাকা পারস্পরিক বোঝাপড়া সব চেয়ে ভাল জায়গায়।’’
সিএএ-এনআরসি বিরোধী প্রতিবাদে ডিসেম্বর থেকে উত্তাল গোটা ভারত। কয়েক দিন আগেই বিষয়টিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে মেনে নিলেও এ নিয়ে অনিশ্চয়তার জের তাঁদের দেশেও পড়তে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ বার খোদ হাসিনা যে-ভাবে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করলেন, তাতে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অন্য রকম মাত্রা পেল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
অসম এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ এবং সিএএ পাশের পর থেকে ভারতে আসা বাংলাদেশিরা অনেকেই নিজেদের দেশে ফেরত গিয়েছেন বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সে-কথা উড়িয়ে হাসিনা জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কোনও নজির নেই। বাংলাদেশে ১৬ কোটি জনসংখ্যার ১০ শতাংশের কিছু বেশি (প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ) হিন্দু, এই তথ্যও আজ তুলে ধরেন হাসিনা।
রোহিঙ্গা শরণার্থী-সঙ্কটে ভারতের সাহায্যের কথাও বলেছেন হাসিনা। রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে দিল্লির ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি।