এই সেই গম্বুজ। এএফপি-র তোলা ছবি।
কেউ পেশায় বিমানচালক, কেউ বা চিকিত্সক। কেউ আবার স্থপতি, তো কেউ আবার বিজ্ঞানী। এঁরা সবাই যাবেন মঙ্গলে। আর তারই প্রস্তুতি হিসেবে, আপাতত তাঁরা রয়েছেন এক নির্জন জায়গায় একটি গম্বুজের ভেতরে। এক দু’দিন নয়, বছরখানেক ধরেই তাঁরা এই ‘অজ্ঞাতবাসে’ রয়েছেন। আগামী শনিবারই তাঁরা পাড়ি দেবেন লাল গ্রহের উদ্দেশে।
মঙ্গলে পাড়ি দেওয়ার পথে মহাকাশ যানের ভেতরে যাতে শারীরিক ভাবে কোনও অসুবিধা না হয় তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওই ছ’জন। হাওয়াই দ্বীপের ওই গম্বুজে ছ’জনের দলে রয়েছেন এক ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জার্মানির এক বিজ্ঞানী এবং চার জন মার্কিন নাগরিক। এই চার জন আবার পেশায় যথাক্রমে বিমান-চালক, স্থপতি, চিকিত্সক/সাংবাদিক এবং ভূ-বিজ্ঞানী। তবে, তাঁদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেনি নাসা। শনিবার স্থানীয় সময় অনুযায়ী বেলা ৩টে নাগাদ হাওয়াই থেকে মঙ্গলের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার কথা তাঁদের। বছরখানেক তাঁদের থাকার কথা মঙ্গলে। সৌজন্যে নাসা।
প্রস্তুতি হিসেবে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের উত্তর ভাগের মৌনা লোওয়া এলাকার জনপ্রাণীহীন নির্জন স্থানে একটি গম্বুজের ভেতরে রাখা হয়েছে ওই ছয় জনকে। গম্বুজটি প্রায় ৩৬ মিটার চওড়া এবং ২০ ফুট লম্বা। গম্বুজের মধ্যে তাঁদের প্রত্যেকের আলাদা ঘর আছে। সেখানে আছে বিছানা-টেবল-চেয়ার। খাবার বলতে ক্যানবন্দি টুনা মাছ এবং পাউডার চিজ। প্রয়োজনে বাইরে বেরনোর সময় তাঁদের পরনে থাকে মহাকাশচারীদের পোশাক। বহির্বিশ্বের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। বন্ধ ইন্টারনেট ব্যবহারও।
কিন্তু, কেন এত কৃচ্ছসাধন?
নাসা সূত্রে খবর, রোবোট পাঠাতে মঙ্গলে সময় লাগে মাস আটেক। মানুষের ক্ষেত্রে সেই সময় বেড়ে হতে পারে এক থেকে তিন বছর। এই দীর্ঘ সময় মহাকাশ যানে কাটানোর প্রস্তুতি হিসেবেই তাঁদের গম্বুজবাসের আয়োজন করেছে নাসা।
২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর বিষয়ে সাফল্য পেতে চায় নাসা। উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হাওয়াই স্পেস এক্সপ্লোরেশন অ্যানালগ এবং সিম্যুলেশন’ (হাই-সিজ)। এ জন্য ১০ লাখ ২০ হাজার ডলার বরাদ্দ করেছে নাসা। আগামী তিন বছরে এই প্রকল্পে আরও ১০ লাখ ডলার অনুদান পেয়েছে তারা। এর আগে ফ্লোরিডায়, আন্টার্টিকা এবং রাশিয়াতেও একই ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। ২০১১-য় দীর্ঘ ৫২০ দিন ধরে চলে এই পরীক্ষা।