পুলিশ জানিয়েছে, অড্রে একজন রূপান্তরকামী। জন্মসূত্রে মহিলা হলেও নিজেকে পুরুষ বলতেই পছন্দ করতেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত।
সকাল ১০টায় শুরু হয়েছিল স্কুল। ঘটনাটি ঘটল তার ঘণ্টা খানেক পরেই। স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্রী আচমকাই স্কুলের ভিতরে ঢুকে পড়লেন দু’হাতে দু’টি রাইফেল নিয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলতে শুরু করল এলোপাথাড়ি গুলি। ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার টেনেসির শহর ন্যাশভিলের একটি ক্রিশ্চিয়ান স্কুলে।
স্কুলটিতে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের কারও বয়স ১২ বছরের বেশি নয়। প্রাক্তন ছাত্রীর চালানো গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ৬ জন। গুরুতর জখম হন আরও অনেকেই। রক্তাক্ত করিডোরে পড়ে কাতরাতে দেখা যায় কয়েক জনকে। বাকিদের আতঙ্কে ছুটে পালাতে দেখা যায় স্কুলের মূল দরজা দিয়ে।
এর কিছু ক্ষণ পরেই অবশ্য পুলিশ এসে পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। বন্দুকবাজ প্রাক্তন ছাত্রীকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে তারা। তিনি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে, পাল্টা পুলিশও গুলি চালায়। ৩০-৪০ মিনিটের মধ্যেই গুলিযুদ্ধ থামে। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় প্রাক্তন ছাত্রীর।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকবাজ ওই প্রাক্তন ছাত্রীর নাম অড্রে হ্যালে। তাঁর বয়স ২৮। বাড়ি ন্যাশভিলেই। একজন পেশাদার গ্রাফিকশিল্পী ছিলেন অড্রে। যদিও কেন তিনি হঠাৎ অ্যাসল্ট রাইফেল হাতে নিজের ছোটবেলার স্কুলে হাজির হয়েছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অড্রে স্কুলের পিছনের গেট দিতে ভিতরে ঢোকেন। তখন করিডোর ফাঁকা ছিল। তার লাগোয়া ঘরগুলিতে ক্লাস চলছিল। শ্রেণিকক্ষের ভিতরেই ছিল ছাত্র-ছাত্রীরা। বাইরে পাহারায় ছিলেন দারোয়ান। অড্রেকে দেখে তাঁকে চিনতেও পারেন বৃদ্ধ দুই দারোয়ান। তাঁর হাতে রাইফেল দেখে তাঁরা বাধা দিতে অড্রে নির্মম ভাবে গুলি চালিয়ে দেন তাঁদের দু’জনের বুকে। সঙ্গে সঙ্গেই লুটিয়ে পড়েন তাঁরা।
এর পরে সোজা ক্লাসরুমের দরজা খুলে ঢুকে পড়েন অড্রে। হাতের অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালান। সেই গুলির আঘাতে মৃত্যু হয় তিন ছাত্র-ছাত্রীর। পরে স্কুলের এক কর্মীও মারা যান। শেষে অড্রেরও মৃত্যু হয় পুলিশের গুলিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, অড্রে একজন রূপান্তরকামী। জন্মসূত্রে মহিলা হলেও নিজেকে পুরুষ বলতেই পছন্দ করতেন তিনি। সম্প্রতি তিনি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েও যাচ্ছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ। তবে নিজের পুরনো স্কুলে হামলার ঘটনা সেই সংক্রান্ত কোনও মানসিক সমস্যার কারণে হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।