অস্ত্রোপচার নয়, শুধু স্ক্যান করেই জানা যেতে পারে গলার বা মাথার টিউমারের অবস্থান। গলায় অথবা মাথায় ক্যানসার হয়েছে। রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপিও হয়েছে। কিন্তু আদৌ কি কোনও কাজ হয়েছে তাতে, হলেও তা কতটা— এ সব প্রশ্নের উত্তর পেতে সাধারণত মাথায় বা গলার অস্ত্রোপচার করতে হয়। তবে এখন স্ক্যান করেই উত্তর মিলতে পারে বলে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এ রকমই দাবি করেছেন বার্মিংহাম এবং ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক।
তাঁরা জানিয়েছেন, ৫৬৪ জন ক্যানসার আক্রান্তের উপর এই পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, অস্ত্রোপচার করে যতটা সাফল্য আসে ঠিকই একই হারে সাফল্য আসে স্ক্যানের ক্ষেত্রেও। চিকিৎসকদের কথায়, আসলে অস্ত্রোপচার করতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। এমনকী তার পরেও নানা ধরনের জটিলতা হতে পারে।
কিন্তু গবেষকদের দাবি, ‘পি ই টি-সি টি’ স্ক্যানের মাধ্যমে সেই সব জটিলতা এড়ানো যাবে। এই স্ক্যানে একটি বিশেষ তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। যেটি আসলে একটি ডাই বা রঞ্জক। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিশাম মেহান্না বলেছেন, ‘‘মৃত কোষের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলি। ফলে তাদের চিহ্নিত করা মুস্কিল। কিন্তু এই বিশেষ স্ক্যানের মাধ্যমে সেই রাসায়নিকটি দিয়ে সহজেই ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলিকে খুঁজে পাওয়া যাবে। এবং বোঝা যাবে তারা আদৌ বেঁচে আছে কি না।’’
অতএব এই পদ্ধতির সাহায্যে অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি সহজেই কাটানো যাবে বলেই তাঁর মত। ক্যানসার গবেষণায় এ রকম পরীক্ষা যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই জানালেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ গৌতম মুখোপাধ্যায়। তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, গলায় বা মাথায় যাঁদের ক্যানসার হয়েছে— সবার ক্ষেত্রেই যে এই একই চিকিৎসা পদ্ধতি কার্যকর হবে, তা নয়। এক জন ক্যানসার আক্রান্ত রোগী অন্য জনের থেকে আলাদা হতে পারেন।