এই তরুণই ম্যনচেস্টার এরিনায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, বলছে ব্রিটেনের পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
গত এক বছর ধরে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা কষেছিল সলমন আবেদি। আজ এক ব্রিটিশ দৈনিক দাবি করেছে, ম্যাঞ্চেস্টারে একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণের সরঞ্জাম জমা করছিল সে।
গত সোমবার রাতে ম্যাঞ্চেস্টার এরিনায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে যথেষ্ট বুঝেশুনেই এগিয়েছিল আবেদি। প্রায় এক বছর আগে খোলা তার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাঙ্কাউন্ট অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েই ছিল বহুদিন। সম্প্রতি সেটিতে হাত পড়ে বিস্ফোরণের সরঞ্জাম কেনার জন্য। এপ্রিলের মাঝামাঝি লিবিয়া যাওয়ার আগে ওই সব জিনিস কেনা হয়ে গিয়েছিল তার।
গোটা ব্রিটেনে সন্ত্রাস-সতর্কতা এখনও ‘আশঙ্কাজনক’ স্তরে রাখা হয়েছে। পুলিশের দাবি, আবেদিকে বোমা তৈরিতে সাহায্য করেছে যারা, যত দিন তাদের হদিস না-মিলছে, ততদিন এই স্তরেই থাকবে সতর্কতা। পুলিশ এখন জেনেছে, ম্যাঞ্চেস্টারের পিকাডিলি ট্রেন স্টেশনের কাছে একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিল আবেদি। বিস্ফোরক নিয়ে তার নিজের বাড়িতে কখনওই যায়নি সে। জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের ঠিক পাঁচ দিন আগে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে চলে গিয়েছিল আবেদি। এর পরে ইস্তানবুল থেকে ডুসেলডর্ফ হয়ে সে আবার ম্যাঞ্চেস্টারে ফিরে আসে। তার যাত্রাপথের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সে দেখা করেছিল কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে। তার সঙ্গীরা আরও কোনও হামলা চালাতে পারে, এই আশঙ্কা এখনও রয়েছে ব্রিটেনে।
লিবিয়া প্রশাসনের দাবি, তাদের তদন্তকারীদের কাছে আবেদির মা সামিয়া তাব্বাল বলেছিলেন, হামলার আগে আবেদি তার ভাই হাশেমকে ফোন করেছিল। ফোন ছাড়ার আগে একবার মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিল সে। তখন মার কাছে ক্ষমা চায় আবেদি। সামিয়ার দাবি, তিনি ছেলের কট্টরপন্থী মনোভাব একটু একটু করে বুঝতে পারছিলেন। আর তাই ত্রিপোলি পৌঁছনোর পরে তার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হজে সৌদি আরবে যাবে বলে ছেলেকে সেটা ফেরত দেন। মক্কা না গিয়ে ছেলে পৌঁছেছিল ম্যাঞ্চেস্টার।
বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে আরও এক ব্যক্তিকে আজ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আপাতত ব্রিটিশ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে মোট আট জন। যাদের বয়স ১৮-৩৮ বছর।
ইতিমধ্যে ব্রিটেনে একটু একটু করে ভোটের আবহ ফিরছে। ৮ জুন নির্বাচন। বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন ফের প্রচারে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। ম্যাঞ্চেস্টারে বিস্ফোরণের জন্য ব্রিটেনের বিদেশনীতিই দায়ী— এই মর্মে বক্তৃতা দিতে চান তিনি। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে অবশ্য এখন ব্যস্ত ইতালির সিসিলিতে জি৭ বৈঠকে। সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আজ আলোচনায় বসবেন তিনি।