তাঁর কথায়, “আমাদের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ আছে। আজ বিকেলে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষ থেকে আমি তাঁর কাছে শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সুবিধাজনক সময়ে আমরা তাঁকে ভারতে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছি।”
ঢাকায় বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফর করলেও বিভিন্ন কারণে কূটনৈতিক নাগরদোলার মধ্যে গিয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক। এই বছর চলতি ভূকৌশলগত অস্থিরতার মধ্যেও যাতে দু’দেশের মধ্যে ‘সোনালি অধ্যায়’ ফিরিয়ে আনা যায়, সেই লক্ষ্যে সক্রিয় সাউথ ব্লক। এই বছরে তার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে এস জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার এক দিনের ঢাকা সফর সারলেন। গণভবনে গিয়ে আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন বিদেশমন্ত্রী। তাঁকে ভারতে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফে আমন্ত্রণ জানান। পাশাপাশি মোদীর ‘ব্যক্তিগত শুভেচ্ছাও’ জয়শঙ্কর পৌঁছে দেন হাসিনার কাছে। বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জয়শঙ্কর।
পরে বিদেশমন্ত্রী টুইট করে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই তাঁর উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা তাঁর কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এই দুই নেতার অভিভাবকত্বে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে।’ অন্য দিকে মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর তাঁর বক্তব্য, “বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমাদের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীসুলভ অংশিদারিত্ব সুষ্ঠু ভাবে এগিয়ে চলেছে। তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য। জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিটির বৈঠকে তাঁর উপস্থিতির দিকে তাকিয়ে রয়েছি।”
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী মোমেন আজ বৈঠকে তিস্তা চুক্তি এবং রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভারত বাংলাদেশের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। বেশ কিছু ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে দু’দেশ যৌথ ভাবে চোখে পড়ার মতো উন্নতি করেছে। তাঁর কথায়, এর আগে বেশ কিছু বকেয়া বিষয়ের নিষ্পত্তি হয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে। একই ভাবে ঢাকা আশা করে, তিস্তা চুক্তিও দ্রুত সম্পন্ন হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের সহযোগিতাও চেয়েছেন মোমেন।
অন্য দিকে মোদী সরকারের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বৈঠকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদ্বেগ নিরসনে নয়াদিল্লি সাধ্য মতো চেষ্টা করবে। ভারতীয় সহায়তায় চলা বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রকল্প দ্রুত শেষ করার জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী। বৈঠকের পর জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশে আসতে পারা সর্বদাই আনন্দের। এক বছরের কিছুটা বেশি সময় পরে ঢাকায় এলাম। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে কোভিড মহামারির চ্যলেঞ্জের মধ্যেও নিয়মিত ভাবে আমরা সমন্বয় বজায় রেখে গিয়েছি।” প্রতিবেশী হিসেবে নিয়মিত, আনুষ্ঠানিক ও আন্তরিক আলোচনা দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্কের প্রতিফলন বলেও মন্তব্য করেন জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, “আমাদের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ আছে। আজ বিকেলে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষ থেকে আমি তাঁর কাছে শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সুবিধাজনক সময়ে আমরা তাঁকে ভারতে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছি।”