—প্রতীকী চিত্র।
ক্রাইমিয়া অধিগ্রহণের পরে তার ভূখণ্ডের সঙ্গে রাশিয়াকে সংযুক্ত করতে একটি সেতু তৈরি করেছে মস্কো। গত কাল রাতভর সেই সেতু নিশানা করে হামলা চালাল ইউক্রেনীয় নৌবাহিনী ও এসবিইউ নিরাপত্তা বাহিনী। ইউক্রেনেরই একটি সূত্র মারফত প্রকাশ্যে এসেছে এই খবর। জলপথে ড্রোনের সাহায্যে হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনীরই একটি সূত্র হামলা সম্পর্কে বিশদে জানিয়েছে। এক কর্তা বলেন, ‘‘সেতুর কাছে পৌঁছনো বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু শেষমেশ সফল হই।’’
রাশিয়া ও ক্রাইমিয়ার সংযোগকারী কের্চ সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পথেই ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ সেনাদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হয়। গত বছর অক্টোবর মাসে ট্রাক বোমায় আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেতুটি। এই হামলার জন্য ইউক্রেনের দিকে আঙুল তুলেছিল মস্কো। কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করে কিভ। এ বারে অবশ্য ইউক্রেনেরই একটি সূত্র হামলার খবর জানিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সহযোগী মিখাইলো পোডোল্যাকও টুইটারে জানিয়েছেন, ‘‘একটি বেআইনি পরিকাঠামো, গণহত্যার জন্য রুশ অস্ত্র পাঠানোয় ব্যবহার করা হত। এর আয়ু তো কম হবেই।’’ এসবিইউ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছে, ‘‘ওই সেতু আবার ঘুমিয়ে পড়েছে।’’ সংস্থাটির মুখপাত্র আর্টেম ডেখটিয়ারেঙ্কো বলেছেন, ‘‘খুব আগ্রহের সঙ্গে সবটা দেখছি। পুতিনের রাজত্বের অন্যতম প্রতীক সামরিক বোঝা টানতে গিয়ে ফের ব্যর্থ।’’
দক্ষিণ রাশিয়ার বেলগোরোদের গভর্নর ব্যাচিস্লাভ গ্ল্যাডকোভ জানিয়েছেন, আজ ক্রাইমিয়া সেতুর হামলায় এক কিশোরী জখম হয়েছে। তার মা-বাবা মারা গিয়েছেন হামলায়। তাঁরা একটি গাড়িতে ছিলেন। গ্ল্যাডকোভ বলেন, ‘‘সবচেয়ে ভয়াবহ, মা-বাবা দু’জনেই প্রাণ হারিয়েছেন।’’ গাড়ির নম্বর দেখে মেয়েটির আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। জখম কিশোরীর চিকিৎসা চলছে। ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, আঘাত খুব গুরুতর নয়। পরিস্থিতি স্থিতিশীল। গ্ল্যাডকোভ বলেন, ‘‘আমাদের তরফ থেকে সহানুভূতি জানানো হচ্ছে। যদিও কোনও শব্দই এই ক্ষত পূরণ করতে পারবে না।’’ ক্রাইমিয়া সেতুর হামলা নিয়ে ক্রেমলিনের তরফে অবশ্য কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুটের যুদ্ধেও আজ অগ্রগতি হয়েছে কিভের বাহিনীর। মাস খানেক আগে ইয়েভগেনি প্রিগোঝিনের ওয়াগনার বাহিনীর নেতৃত্বে বাখমুট দখল করে রাশিয়া। তবে ইউক্রেন এখনও থেমে নেই। জমি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিনিয়ত লড়ে চলেছে তারা। উপপ্রতিরক্ষা মন্ত্রী গান্না মালয়ার বলেন, ‘‘গত এক সপ্তাহে, যুদ্ধক্ষেত্রে বাহিনীর কৌশলগত অবস্থানের অগ্রগতি হয়েছে। সাত বর্গকিলোমিটার এলাকা স্বাধীন হয়েছে।’’