যান্ত্রিক গোলযোগ নয়, বাইরে থেকেই ধ্বংস করা হয়েছে বিমানটিকে। তদন্তকারীরা বলছেন, এমনটাই নিশ্চিত করেছে ব্ল্যাকবক্স। ২১৭ জন যাত্রী এবং সাত জন বিমান কর্মী-সহ শনিবার মিশরের সিনাইয়ে ভেঙে পড়ে রুশ বিমানসংস্থা কোগালিমাভিয়ার মেট্রোজেট বিমান এয়ারবাস এ৩২১। বিমান ভেঙে পড়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে এমন তথ্যই জানানো হল বিমান সংস্থাটির তরফে।
শনিবার রাতেই মিশরের আইএস জঙ্গিদের একটি শাখা সংগঠন ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়ে জানায়, তারাই গুলি করে নামিয়েছে বিমানটি। যদিও মিশর প্রশাসনের তরফে এই দাবির সত্যতা উড়িয়ে দেওয়া হয়। বিশেষ়জ্ঞরা জানান, রেডার থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মুহূর্তে বিমানটি ৩১ হাজার ফুট উপরে ছিল। অত উঁচু থেকে বিমান নামিয়ে আনার মতো অস্ত্র সে দেশের জঙ্গি সংগঠনটির কাছে নেই।
একটি সূত্রের তরফে খবর, ২০০১ সালের নভেম্বরে মিশরেই এক বার দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল এই বিমানটি। সে সময় লেজের অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু রুশ বিমান সংস্থার তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ত্রুটি মেরামতির পরেই ফের উড়ান চালু করেছিল বিমানটি। মিশরের সৈকত শহর শর্ম এল-শেখ থেকে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে যাওয়ার জন্য শেষ উড়ান শুরুর আগেও ভাল ভাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল বিমানটিকে। কোনও ত্রুটি পাওয়া যায়নি বলেই দাবি সংস্থার। তা সত্ত্বেও রওনা হওয়ার পর ২৫ মিনিট না পেরোতেই ৩১ হাজার ফুট উঁচু থেকে মিশরের আল-আরিশ শহরের ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে হাসানা এলাকার দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে ভেঙে পড়ে বিমানটি।
সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ডিরেক্টর আলেকজান্ডার স্মিরনভ সোমবার সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘বিমানটিতে এমন কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না, যাতে সেটি মাঝ আকাশে ভেঙে পড়তে পারে। চালকের তরফেও কোনও গাফিলতি ছিল না। দুর্ঘটনার ব্যাখ্যা এখন একটাই দাঁড়িয়েছে। বাইরে থেকে কোনও ভাবে আক্রমণ চালানো হয়েছে বিমানটির উপর।’’
ফলে সব মিলিয়ে ফের জঙ্গিহানার দিকেই ঝুঁকেছে সন্দেহের পাল্লা।
রুশ বিমান সংস্থার এই দাবির পর মিশর অবশ্য এখনও সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি।
শনিবারের দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার ভোরে প্রথম দফায় ১৪৪টি দেহ সেন্ট পিটার্সবার্গে আনা হয়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফায় দেহ আনার জন্য সোমবার বিকেলেই আরও একটি বিমান কায়রো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে রওনা হবে।