সিরিয়ার আকাশে রুশ যুদ্ধবিমানের হানাদারি বাড়ল।
শুরু হয়ে গেল মুহূর্মুহূ বোমাবর্ষণ। সঙ্গে লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হানা। সিরিয়ার বিশেষ কয়েকটি এলাকায় বেছে বেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের গোপন ডেরাগুলির ওপর বিমান হানাদারি শুরু হয়েছে। দাবি মস্কোর। সেই হানাদারি যে আর কয়েক দিনের মধ্যে আরও বাড়বে, তারও ইঙ্গিত মিলেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘‘এই বিমান হানা সিরিয়ার মাটি থেকে আইএস জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন করার পক্ষে যথেষ্ট নয়। হানাদারি আরও বাড়ানোর প্রয়োজন সিরিয়ার আকাশে।’’
মস্কোয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরিয়ার আকাশ থেকে এক সঙ্গে হানাদারি চালিয়েছে ৬৯টি রুশ যুদ্ধবিমান। এর আগে সংখ্যাটা ছিল ৪৪। প্যারিস হামলার পর সিরিয়ায় আরও ১৫টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে রাশিয়া। ওই হানাদারিতে অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ ও কাল- দু’দিনই রুশ যুদ্ধবিমান থেকে ছোঁড়া হয়েছে দূর পাল্লার ১৮টি ‘ক্রুইজ’ ক্ষেপণাস্ত্র। ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছোঁড়া হয়েছে কাস্পিয়ান সাগরে থাকা রুশ যুদ্ধজাহাজগুলি থেকে। ক্ষেপণাস্ত্র হানায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাক্কা, ইদলিব ও আলেপ্পো শহরে আইএস জঙ্গিদের কম করে সাতটি ঘাঁটি।
পড়ুন আইএসের বিরুদ্ধে আরও জোরদার অভিযান, সর্বসম্মত রাষ্ট্রপুঞ্জ
ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মুল টার্গেট ছিল- দার আল-জাউর এলাকা। আইএস জঙ্গিদের বেশির ভাগ গোপন ডেরা সিরিয়ার ওই এলাকাটিতেই রয়েছে বলে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর।
সীমান্তবর্তী দার আল-জাউর এলাকাটি খুবই স্পর্শকাতর। যার এক দিকে সিরিয়ার রাক্কা শহর। যে শহরটিকে তাদের ‘রাজধানী’ বলে ঘোষণা করেছে আইএস জঙ্গিরা। দার আল-জাউরের অন্য প্রান্তে রয়েছে সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশ ইরাকের ইদলিব শহর। ওই ইরাকি শহরটিও আপাতত আইএস জঙ্গিদের কব্জায়।
দার আল-জাউর শহরটিকে আইএস জঙ্গিদের কব্জায় রাখার আরও একটি কারণ, প্রচুর তেলের খনি রয়েছে ওই সিরীয় শহরে। সংগঠনের তহবিল ভরাতে বেআইনি ভাবে ওই খনিগুলি থেকে তেল তুলে আইএস জঙ্গিরা তা বিক্রি করছে। মহাকাশযান ও উপগ্রহ থেকে তার ছবিও তোলা হয়েছে বলে সম্প্রতি ‘জি-২০’ জোটের দেশগুলির বৈঠকে জানিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ ও গত কালের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হানায় রাক্কা, ইদলিব ও আলেপ্পোয় জঙ্গিদের দখলে থাকা প্রচুর তেলের খনিও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।