ফাইল ছবি।
ইউক্রেন সমস্যা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এই মুহূর্তে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতম সহযোগী চিনের প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন সমস্যা নিয়ে অঙ্গুলিনির্দেশ করলেন সামরিক ক্ষেত্রে ইউক্রেনের ক্রমশ ইউরোপ এবং আমেরিকা ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার প্রবণতার দিকে। জানালেন, এই সমস্যা বিশ্ব মানবতার জন্য বিপদঘণ্টি স্বরূপ।
চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শি বলেছেন, ‘‘ইউক্রেন সঙ্কট আবার মানবতার জন্য বিপদঘণ্টি বাজিয়েছে। যদি অপরের শান্তি ও সমৃদ্ধির বিনিময়ে কোনও দেশ নিজের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে চায় এবং নিজের শক্তি সম্পর্কে অকারণ অহমিকায় ভুগে সামরিক জোট আরও প্রসারিত করতে চায়, তাহলে এটাই ভবিতব্য।’’ এ ছাড়াও তিনি বলেন, ‘‘ইতিহাস আমাদের বার বার দেখিয়েছে, অন্যের রাস্তা আটকাতে গেলে দিনের শেষে নিজের পথও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।’’
কোনও সমাধানের পথ না দেখালেও জিনপিংয়ের এই মন্তব্যের বিপুল তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি রাশিয়া ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর করার পর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো মাস। কিন্তু আপাতত রক্তক্ষয় থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আমেরিকা তথা পশ্চিমী শক্তিগুলো মনে করছে, এই যুদ্ধ দীর্ঘকালীন চেহারা নিয়ে আরও ভয়াবহ আকার নেবে। এই পরিস্থিতিতে জিনপিংয়ের এই মন্তব্যের ওজন বিপুল, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্পন্ধে ওয়াকিবহালরা। তাঁদের যুক্তি, যে ভাবে শান্তির দৌত্য চালানোর পরিবর্তে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে কিভকে আরও ভয়াবহ যুদ্ধের গর্তে ঠেলে ফেলা হচ্ছে, তা না পসন্দ চিনের। ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়াকেও ভাল নজরে দেখছে না চিন। এই প্রেক্ষিতে ওই অঞ্চলে আমেরিকার প্রভাববৃদ্ধি নিয়েও মাথাব্যথা রয়েছে রাশিয়া-চিনের। চিন, রাশিয়া মনে করছে, ঢালাও অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের নামে আসলে ওই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী অশান্তির বীজ বপন করতে চাইছে আমেরিকা ও তাদের জোটসঙ্গীরা। সব মিলিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ যে খাতে গড়াতে চলেছে, তা আঁচ করে খুব একটা স্বস্তিতে থাকতে পারছে না চিন। তাই মানবতার জন্য বিপদঘণ্টি হিসেবে চিহ্নিত করে ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন শি। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।