ইউক্রেন যুদ্ধে প্রতি দিনই বাড়ছে রুশ সেনার হতাহতের তালিকা। ছবি: রয়টার্স।
টানা সাড়ে আট মাসের যুদ্ধে ইউক্রেন ফৌজের প্রত্যাঘাতে নিহত এবং আহত হয়েছেন এক লক্ষেরও বেশি রুশ সেনা। গোয়েন্দা রিপোর্ট উদ্ধৃত করে বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন আমেরিকা সেনার জেনারেল মার্ক মিলেরি! সেই সঙ্গে তিনি জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ওই যুদ্ধে রুশ বাহিনীর হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি সাধারণ ইউক্রেনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
ইউক্রেন সেনার ধারাবাহিক হামলার মুখে গত বুধবার খেরসন শহর থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া! সামরিক অবস্থানগত দিক ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ ওই শহর ছাড়ার কারণ হিসাবে অবশ্য ‘শীতে সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার’ যুক্তি দিয়েছে মস্কো। যদিও সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশ সেই যুক্তি মানতে চাইছেন না। রুশ সেনার জেনারেল সের্গের সুরভিকিন জানিয়েছেন, ‘আপাতত’ তাঁরা ডিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে সরে আসছেন। এর ফলে গোটা খেরসন প্রদেশ-সহ দক্ষিণ ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনীর হাতছাড়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের ঘোষণা পর তাঁর বাহিনীর হাতে প্রথম এসেছিল দক্ষিণ ইউক্রেনের এই প্রাদেশিক রাজধানী-সহ গোটা খেরসন প্রদেশ। কিন্তু গত ১০ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির অনুগত বাহিনীর প্রত্যাঘাতে খেরসনের বিস্তীর্ণ এলাকা রুশ ফৌজের হাতছাড়া হয়েছিল।
শুধু খেরসন নয়, রাজধানী কিভ-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের খারকিভ এবং পূর্বের ডনবাস এলাকা (ইউক্রেনের ডনেৎস্ক ও লুহানস্কে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল রক্ষা করার জন্য সংখ্যা এবং সমর-সম্ভারে প্রবলতর প্রতিপক্ষ রাশিয়ার বিরুদ্ধে মরণপণ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে প্রতি দিনই নিহত রুশ সেনার সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রিপোর্টে দাবি। গত অগস্টে সামরিক পর্যবেক্ষক সংস্থা মিলিটারি টাইমস দাবি করেছিল, ছ’মাসে ইউক্রেনে অন্তত ৭০ হাজার সেনাকে হারিয়েছে রাশিয়া। সে সময় নিহত ইউক্রেন সেনার আনুমানিক সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার।