ইউক্রেন জুড়ে বদলানো হয়েছে নানা পথনির্দেশিকা। ছবি: সংগৃহীত।
কোনওটায় লেখা ‘নরকের দ্বারে স্বাগত’। কোনওটায় বা ‘জাহান্নামে যাও’। হানাদার রুশ বাহিনীর উদ্দেশে কিভমুখী রাস্তায় দু’ধারে এমনই নানা ‘বার্তা’ লিখে রেখেছে ইউক্রেনের সেনা এবং আমজনতা। পাশাপাশি, রাশিয়ার সেনাকে বিভ্রান্ত করতে রাতারাতি পুরনো পথনির্দেশ ভেঙে বসানো হয়েছে নতুন নানা ‘দিগ্নির্দেশক’।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধ ঘোষণার পরেই ইউক্রেন পার্লামেন্টের সদস্য ভোলোদেমির আরিয়ভ বলেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশ এবং দেশবাসী আত্মরক্ষার জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত।’’ ইউক্রেন সেনার পাশাপাশি সে দেশের আমজনতাও ইতিমধ্যেই সক্রিয় ভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। রাজধানী কিভের ঘরে ঘরে চলছে মলটোভ ককটেল বোমা বানানোর প্রস্তুতি।
এরই পাশাপাশি শক্রুসেনার মনোবল নষ্ট করতে নানা পদক্ষেপও চলছে। রাস্তার ধারের নয়া ‘পথনির্দেশিকা’গুলির তারই উদাহরণ। আরিয়ভ সোমবার বলেন, ‘‘রুশ সেনাকে নরকের রাস্তায় ঠেলে দিতে যা যা করা প্রয়োজন, আমরা তা-ই করে চলেছি।’’ ইতিমধ্যেই রাজধানী কিভ-সহ বিভিন্ন শহরে যুবকদের নিয়ে প্রতিরোধ বাহিনী গড়েছে প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সরকার। তাদের হাতে অস্ত্রও তুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রথম তিন দিনের যুদ্ধে চমকপ্রদ অগ্রগতি দেখালেও রবিবার থেকে ইউক্রেনে মুখোমুখি লড়াইয়ে তেমন সাফল্য পায়নি ভ্লাদিমির পুতিনের সেনা। কিভের উপকণ্ঠে গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছে তারা। কারণ, শহরে ঢুকতে গেলে কড়া প্রতিরোধের সম্ভাবনা। শুক্রবার ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের নিয়ন্ত্রণ নিলেও রবিবার ইউক্রেন সেনা এবং প্রতিরোধ বাহিনীর পাল্টা হানায় তা হাতছাড়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টানা পাঁচ মাস ধরে হিটলারের বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়েছিল স্তালিনগ্রাদে (বর্তমান নাম ভলগোগ্রাদ) অবরুদ্ধ রুশ সেনা এবং আমজনতা। সেই যুদ্ধেই প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিল জার্মান নাৎসি বাহিনী। সে সময় জার্মান বাহিনীর মনোবল ভাঙতে এমন নানা বার্তা দেওয়ালে লিখে রাখত রুশ ফৌজ। স্তালিনগ্রাদের ধাঁচেই এ বার শহরে শহরে রুশ বাহিনীকে রোখার চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেন।