ইউক্রেনে ফের গণকবরের সন্ধান মিলল। ছবি: রয়টার্স।
আঁচ মিলেছিল কয়েক দিন আগেই। এ বার তা সত্যি প্রমাণ করে খারকিভে নতুন করে রুশ হামলা শুরু হল। ইউক্রেন সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার উত্তরাঞ্চলের ওই শহরে রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণে সাত জন অসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এরই মধ্যে রাজধানী কিভের অদূরে নতুন একটি গণকবরের সন্ধান মিলেছে বলে ইউক্রেন সরকারের দাবি। সেখানে একটি গির্জার পিছনের গর্ত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক ডজনেরও বেশি দেহ। কয়েক সপ্তাহ আগে কিভ-মুখী রুশ ফৌজ বুচার অদূরের ওই জনপদটি দখল করেছিল। কিন্তু ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত বাহিনীর প্রতিআক্রমণে পিছু হঠতে বাধ্য হয় তারা। অভিযোগ, তার আগে নির্মম ভাবে ওই এলাকায় বহু সাধারণ মানুষকে খুন করা হয়। রাজধানী কিভ থেকে ৬০ কিলেমিটার দূরে ছোট্ট শহর বোরোডিয়াঙ্কাতেও রুশ সেনা গণহত্যা চালিয়েছে বলে বুধবার অভিযোগ করেছে জেলেনস্কি সরকার।
চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছিল খারকিভের পূর্ব দিকে জড়ো হয়েছে রুশ সেনার কনভয়। কয়েকশো ট্যাঙ্ক, ‘ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল্’, ‘আর্মড পার্সোনেল ক্যারিয়ার’, ট্রাক ও অন্যান্য যুদ্ধযানের প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ কনভয় দেখে আন্দাজ করা হয়েছিল, খারকিভ দখল করে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে ঢুকতে চাইছে রুশ বাহিনী।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেনা অভিযানের ঘোষণার পরেই পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস (ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) সীমান্ত এবং বেলারুশ সীমান্ত থেকে খারকিভ দখলের অভিযান শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখনও ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর দখলে পুরোপুরি সাফল্য পায়নি রুশ ফৌজ। একই ভাবে রাজধানী কিভ-সহ ইউক্রেনের উত্তর, উত্তর-পূর্বে অন্য বড় শহরগুলি দখল করতে ব্যর্থ হয়েছে রুশ বাহিনী। চেরনোবিল, চেরনিহিভের মতো শহর দখল করেও ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে তাদের। এমনকি, ডনবাস এলাকাতেও নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব পায়নি রুশ সেনা।
এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে ‘সিরিয়ার কসাই’ নামে পরিচিত জেনারেল আলেকজান্দার দর্নিকভের হাতে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে সেনা অভিযানের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন পুতিন। অতীতে সিরিয়ার যুদ্ধে বহু অসামরিক নাগরিককে খুনের অভিযোগ রয়েছে ওই রুশ জেনারেলের বিরুদ্ধে। বুচা, মারিয়ুপোল-সহ বিভিন্ন শহরে গণহত্যার পিছনে দর্নিকভের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের।