ভ্লাদিমির পুতিন।
বয়স ৬৯। কপালে বলিরেখা স্পষ্ট হওয়া অস্বাভাবিক নয়। বরং তার সঙ্গে ঝুলে পড়া গাল, শিথিল হওয়া চিবুকের মতো বয়সজনিত ছাপও চোখে পড়তে পারে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেদিক দিয়ে সৌভাগ্যবান। ৭০-এর দোরগোড়ায় পৌঁছে তিনি বুড়িয়ে যাননি। তবে এ বার নাকি তাঁকেও বৃদ্ধ দেখাতে পারে।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা সম্প্রতি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ঠিক করেছে রাশিয়ায় কোনও ওষুধ সরবরাহ করবে না। পুতিনের সমালোচকদের দাবি, এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে চলেছে পুতিনেরই।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি জানিয়েছিল, রাশিয়ার মানুষের প্রতি সহানুভূতি থাকলেও তারা এই যুদ্ধ ইউক্রেনের সমর্থক। তাই ক্যানসার এবং ডায়াবেটিসের মতো কিছু রোগের জরুরি ওষুধ ছাড়া আর কোনও ওষুধ রাশিয়ায় সরবরাহ করা হবে না। নিন্দকেরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তে পুতিনের নিত্য ব্যবহারের একটি ওষুধের ভাঁড়ারেও টান পড়তে চলেছে।
আসলে পুতিনের মসৃণ ত্বকের রহস্যোদ্ঘাটনের দাবি করে একবার এক আন্তর্জাতিক সংবাদপত্র লিখেছিল পুতিন নিয়মিত বোটক্স করান। ঘটনাচক্রে শিথিল চামড়া টান টান করার ওই প্রক্রিয়ায় যে ওষুধ ব্যবহার হয় এবং যারা ওই ওষুধ প্রস্তুত করে, তারাও রাশিয়ায় ওষুধ সরবরাহ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার ভিত্তিতেই পুতিনের সমালোচকরা এখন জানতে চাইছেন, তবে কি পুতিনকে শিক্ষা দিতেই এই সিদ্ধান্ত!
পুতিনের বোটক্স জল্পনার সূত্রপাত হয়েছিল ইউক্রেনের রাজধানী কিভে তাঁর একটি বৈঠকের পরই।
যুদ্ধ চলাকালীন এমনিই নানারকম চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। দেশের মজুত কমে আসছে ক্রমশ। স্থলপথে যুদ্ধের প্রয়োজনীয় জ্বালানিও এখন একটি বড় ভাবনা। এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক শক্তিগুলি রাশিয়ার ডানা ছাঁটতে শুরু করেছে। ক্রমশঃ চারপাশ থেকে অর্থনৈতিক রাজনৈতিক চাপ আসছে পুতিনের উপর। এমতাবস্থায় পুতিনের কপালের ভাঁজ কমানোর বোটক্সও যদি না থাকে তবে কি তিনি বুড়িয়ে যাবেন না?প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
তবে যে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই জল্পনা, তা বহুদিন আগেই নস্যাৎ করেছে ক্রেমলিন। ঘটনাটি ঘটে ২০১১ সালে। তখন অবশ্য পুতিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নন। প্রধানমন্ত্রী। কাকতালীয় ভাবে পুতিনের বোটক্স জল্পনার সূত্রপাত হয়েছিল ইউক্রেনের রাজধানী কিভে তাঁর একটি বৈঠকের পরই। বৈঠকে পুতিনের ছবিতে তাঁর চোখের চারপাশে নীলচে আস্তরণদেখা গিয়েছিল। একটি সংবাদপত্র সেই ছবি প্রকাশ করে। সঙ্গে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল, তার শিরোনাম ছিল, ‘পুতিনের মুখে কী হল?’ পুতিনের বোটক্স করানো নিয়েই লেখা হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে। সংবাদপত্রটি দাবি করেছিল, বোটক্সের সূচ ফোটানো হয় চোখের পাশেই। পুতিনের চোখের পাশের নীলচে ছোপ সম্ভবত তার জন্যই। ওই প্রতিবেদন নিয়ে জল্পনার জল এতদূর গড়িয়েছিল যে ক্রেমলিন থেকে বিবৃতি দিয়ে নস্যাৎ করা হয়েছিল দাবিটিকে। মস্কো জানিয়েছিল, পুতিনের চোখের নীলচে ছোপ আসলে নীল আলোর কারসাজি। কালশিটে নয়।