ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘‘আপনারা কি জানেন, সঙ্গে করে একটি আস্ত সমাধিকক্ষ এনেছে রুশরা! পুতিন মৃত সেনাদের দেহ তাঁদের বাড়ির লোকের কাছে পৌঁছে দিতে চান না। আসলে পুতিনের ওই মায়েদের জানানোর ক্ষমতা নেই, যে তাঁদের সন্তানের ইউক্রেনে মৃত্যু হয়েছে।’’
ছবি— রয়টার্স।
ইউক্রেনের আকাশ বাতাস বিষিয়ে উঠছে মৃত মানুষের পচা দেহের দুর্গন্ধে। এখানে-সেখানে চিল-শকুনের ঠোক্কর। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পথঘাটের ছবি এখন এটাই। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, পথেঘাটে পড়ে থাকা লাশের সিংহভাগই ভিনদেশে যুদ্ধ করতে আসা রুশ সেনাবাহিনীর। কিন্তু মস্কো এখনও যুদ্ধে তাদের তরফের ক্ষয়ক্ষতির আনুষ্ঠানিক খতিয়ান পেশ করেনি। স্বভাবতই বেওয়ারিশ হয়ে ইউক্রেনের পথে পড়ে রয়েছে রুশ সেনার মৃতদেহের স্তূপ।
নেটো ও আমেরিকার থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানাচ্ছে, ইউক্রেনের রাস্তায় মৃত রুশ সেনার সংখ্যা ৩ হাজার থেকে ১০ হাজারের মধ্যে। যদিও ইউক্রেন সরকারের দাবি, ইউক্রেনে কমপক্ষে ১৫ হাজার রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে। তাদের সিংহভাগ দেহই নিতে চায়নি রাশিয়া। সেগুলি পড়ে রয়েছে রাস্তাঘাটে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অন্তত দেড় লক্ষ রুশ সেনা নিয়ে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে মস্কো। তার পর থেকে চলছে রক্তক্ষয়ী লড়াই। সেই যুদ্ধ এখনও জারি আছে।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এ ক্ষেত্রে হিসেবে সামান্য গোলমাল করে ফেলেছে রাশিয়া। যুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন ছিল বরফ পড়ার মরসুম। কিন্তু দিন যত এগিয়েছে, বসন্ত এসেছে ইউক্রেনেও। ফলে প্রবল তুষারপাতের মধ্যে যখন রুশ সেনার মৃতদেহ রাস্তাঘাটে পড়ে ছিল, তখন তাতে পচন ধরার সম্ভাবনা ছিল কম। কিন্তু বসন্তে সেটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ইউক্রেন রেড ক্রশের কাছে দেহ সরানোর আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু রাশিয়া নিজের সেনার মৃতদেহ ফেরত না নিলে রেড ক্রশের কিছু করার নেই বলে জানানো হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘‘আপনারা কি জানেন সঙ্গে করে একটি সমাধিকক্ষ এনেছে রুশরা! আসলে পুতিন মৃত সেনাদের দেহ তাঁদের বাড়ির লোকের কাছে পৌঁছে দিতে চান না। আসলে পুতিনের মৃত সেনাদের মায়েদের জানানোর ক্ষমতা নেই, যে তাঁদের সন্তানের ইউক্রেনে মৃত্যু হয়েছে।’’