সুমি থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে বিদেশি পড়ুয়াদের। ছবি: রয়টার্স।
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বের শহর সুমিতে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আটকে পড়া ৬৯৪ জন ভারতীয় পড়ুয়ার প্রত্যেককেই উদ্ধার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী এ খবর জানিয়ে বলেন, ‘‘সোমবার রাতেই সুমি শহর থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের বাসে তুলে পলতাভা শহরে পাঠানো শুরু হয়েছিল। আমি নিজে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করেছিলাম। আজ ৬৯৪ জনকেই সুমি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’
বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, সুমিতে আটকে পড়া ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের পড়ুয়াদের দক্ষিণের শহর পলতোভা থেকে সড়কপথে পশ্চিম সীমান্তের কোনও দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যুদ্ধে পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে আলোচনা করেছিলেন। সে সময়ই মোদী সুমি-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধারের বিষয়ে যুযুধান দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাহায্য চেয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিবার রাতে রুশ সেনাবাহিনী সুমিতে হামলা শুরু হওয়ার পরেই সেখানকার ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটি হস্টেলের পাশেই এক কারখানায় বোমা পড়ায় সেখানকার পড়ুয়ারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বোমা পড়ার পরেই এলাকায় বিদ্যুৎ এবং জলের সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। শীতের মধ্যে বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে হয়েছিল ভারতীয় পড়ুয়াদের।
সুমির কাছে রুশ সীমান্ত। রাশিয়া এ দিক থেকেই আক্রমণ শানাচ্ছে। বিদেশি পড়ুয়ারা দেশে ফিরছেন মূলত ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে। সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রোমানিয়া, হাঙ্গেরি অথবা পোল্যান্ড গিয়ে দেশে ফেরার উড়ান ধরছেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে নয়াদিল্লিও ভারতীয় পড়ুয়াদের সেই পথে ফেরানোর কথা ভেবেছিল। কিন্তু পুতিন সরকার প্রস্তাব দেয়, রাশিয়ার পথে দেশে ফেরানো হবে তাঁদের। সেই প্রস্তাব ইউক্রেন নাকচ করে দেওয়ায় পড়ুয়াদের উদ্ধারের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর সোমবার জট কাটল।