ফাইল চিত্র।
২০২৪ সালের পরেই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে রাশিয়া, সম্পর্ক ত্যাগ করবে নাসার সঙ্গেও। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে এমন কথাই জানিয়েছিল মস্কো স্পেস এজেন্সি তথা রসকসমসের প্রধান ইউরি বরিসভ। এই মন্তব্যের পরেই বিতর্কের সূচনা হয় রসকসমসের আধিকারিকদের মধ্যে। তার পরে, বুধবার সেই বিবৃতির একটু পরিমার্জনা করে রসকসমসের তরফে জানানো হল যতদিন না রাশিয়া নিজস্ব ‘অরবিটাল আউটপোস্ট’ তৈরি করছে, ততদিন আইএসএসে থাকা নিজেদের কসমোনটদের তথা মহাকাশচারীদের সরাবে না তারা। ফলে, নাসা ও রসকসমসের দুই দশকেরও বেশি সময়ের চুক্তি চিরতরে শেষ হতে হতে ২০২৮ সাল হয়ে যাবে, এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া নিজেদের দেশের মহাকাশচারীদের কসমোনট বলে, গ্রিক শব্দ ‘কসমস’ থেকে এই শব্দের উৎপত্তি। অর্থ, ব্রহ্মাণ্ড। সংবাদসংস্থা ও রুশ বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ফলেই এই সিদ্ধান্ত। তিক্ততা বাড়তে বাড়তে রুশ-আমেরিকার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। তাই রুশ-আমেরিকা সহযোগিতার অন্যতম শেষ নিদর্শন আইএসএস থেকে সরে যেতে চাইছে রাশিয়া। ইউক্রেন হামলার ফলে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ইএসএ-র সঙ্গেও সম্পর্কে অবনতি ঘটেছে রসকসমসের।
রসকসমসের এক অভিজ্ঞ আধিকারিকের বুধবার দেওয়া একটি বিবৃতি অনুসারে জানা গিয়েছে, নিজেদের অরবিটাল আউটপোস্ট বা স্পেস স্টেশন তৈরি করতে রাশিয়ার এখনও ছ’বছর বাকি। জানা গিয়েছে, স্পেস স্টেশনটির নাম রস। নাসার মহাকাশ অভিযানের মুখপাত্র ক্যাথি লিডারস বুধবার একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের পরেই নাসার সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের কোনও ইঙ্গিত রসকসমসের তরফে এখনও দেওয়া হয়নি। কাজকর্ম যেমন চলার তেমনই চলছে। অন্তত রস চালু না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়া আইএসএস থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে না, এমনটাই ধারণা তাঁর।
বুধবারই রসকসমসের তরফে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে রুশ মহাকাশচারী ও ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের রুশ নিয়ন্ত্রিত অংশের ফ্লাইট ডিরেক্টর ভ্লাদিমির সোলোভিয়োভের একটি ভিডিয়ো সাক্ষাৎকার। সেখানে সোলোভিয়োভের দাবি, রস স্টেশনটি যথাযথ ভাবে চালু না হওয়া পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন ত্যাগ করা উচিত হবে না রাশিয়ার। তাঁর ধারণা, ২০২৮ সালের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে সেটি।