ফাইল চিত্র।
নাভালনি-কাণ্ডে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে এ বার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার হুমকি দিল রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোরতর সমালোচক হিসেবে পরিচিত অ্যালেক্সেই নাভালনিকে ‘বিষপ্রয়োগে খুনের চেষ্টা’ এবং জার্মানি থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা নিয়ে পশ্চিমী দুনিয়ার সঙ্গে রোজই বিবাদ বাড়ছে মস্কোর। শোনা যাচ্ছে, এর পাল্টা শীঘ্রই রাশিয়ার উপর আরও এক প্রস্ত আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপাতে চায় ইইউ। আর এমনটা হলে মস্কোও যে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না, আজ তা-ই জানিয়ে দিলেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমরা দুনিয়া থেকে স্বেচ্ছায় আলাদা হতে চাই না। কিন্তু পরিস্থিতি বিরূপ হলে, আমরা সম্পর্ক ছিন্ন করতে তৈরি। শান্তি চাইলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতেই হবে।’’
নাভালনি কাণ্ডের জেরে গোড়া থেকেই সরব আমেরিকা, ব্রিটেন। চড়তে থাকা উত্তেজনার পারদে ইতিমধ্যেই রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তিনটি দেশ এক অপরের বেশ কয়েক জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। নাভালনি-সমর্থকদের বিক্ষোভে মদত দিচ্ছে জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ড— এই অভিযোগেই গত সপ্তাহে ওই তিন দেশের কূটনীতিককে বহিষ্কার করে মস্কো। পাল্টা আঘাত আসে সেখান থেকেই। তার পরেই রুশ বিদেশমন্ত্রীর এই ইইউ ছাড়ার হুমকি।
রাশিয়ারই একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাভরভ বলেন, ‘‘ইইউ-এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সত্যিই ভাঙনের মুখে। তবে সম্পর্ক শেষ হলে দায়ী হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নই।’’
এ দিকে নাভালনি অনড়ই। পুতিন-সমর্থক হিসেবে পরিচিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক নবতিপর সেনানী সম্প্রতি একটি প্রচার ভিডিয়োয় বলেছিলেন, পুতিন চাইলে ২০২৪-এর পরেও আরও কয়েক দফা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থেকে যেতে পারেন। ওই প্রাক্তন সেনানীকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা দিয়েছিলেন নাভালনি। যার জেরে আজ ফের তাঁকে আদালতে টেনে আনে মস্কো। যদিও প্রতিপক্ষের আইনজীবীকে কটাক্ষ, এমনকি বিচারকের সঙ্গে এ দিন তর্কও করেন নাভালনি। এক সময় তাঁকে আদালত চত্বর থেকে বার করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিচারক। তাতেও দমেননি নাভালনি। আদালতে ছিলেন ওই বৃদ্ধ সেনানীও। হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন দেখার রাশিয়া সত্যিই ইইউ ছাড়বে, নাকি এ নেহাতই হুঁশিয়ারি! সূত্রের খবর, পশ্চিমী দুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক যা-ই হোক, মস্কো এই মুহূর্তে দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক আরও পোক্ত করতে চাইছে। আগামী সপ্তাহেই রাশিয়া সফরে আসছেন ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। এ বছরেই ভারত-রাশিয়ার বার্ষিক অধিবেশনে ভারত সফরে আসার কথা পুতিনের। এই বিষয়টি ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে লাভরভের মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে কথা হবে শ্রিংলার।