রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।
ব্রিটেনের দুই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তুলল রাশিয়া। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওই দুই কূটনৈতিক আধিকারিককে দু’সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মস্কো। আমেরিকার সঙ্গে বর্তমানে কূটনৈতিক সম্পর্ক মেরামত করার চেষ্টা করছে ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশাসন। তবে ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক দৃশ্যত ক্রমে তলানির দিকেই এগোচ্ছে। সোমবার ব্রিটেনের দুই কূটনীতিককে রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশে আবার সেই ছবিই তুলে ধরল।
মস্কোর এই অভিযোগের পরে ব্রিটেনের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে রয়টার্স। তবে এখনও পর্যন্ত দূতাবাসের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আগেও বেশ কয়েক বার একই ধরনের অভিযোগ উঠে এসেছিল। যদিও ওই অভিযোগগুলি অস্বীকার করেছিল ব্রিটেনের দূতাবাস। আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর রাশিয়ার সঙ্গে সে দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে। আগে আমেরিকা এবং রাশিয়া ‘ইটের বদলে পাটকেল’-এর মতো করে একে অন্যের কূটনীতিকদের দেশছাড়া করত। ফলে দুই দেশের দূতাবাসেই কর্মী সংখ্যায় টান পড়তে থাকে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে ওই সমস্যা দূর করতে আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। ওয়াশিংটন-মস্কো আলোচনা শুরুর পরে সম্ভবত এই প্রথম পশ্চিমি দেশগুলির কোনও কূটনীতিককে বহিষ্কার করল রাশিয়া।
রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস জানিয়েছে, ব্রিটেনের ওই দুই কূটনীতিক রাশিয়ায় প্রবেশের সময়ে ভুয়ো তথ্য দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ‘গোয়েন্দা হিসাবে এবং ধ্বংসাত্মক কাজ করার লক্ষণ’ দেখা গিয়েছে, যা রাশিয়ার পক্ষে ক্ষতিকর বলে দাবি মস্কোর। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক ইতিমধ্যে এই ঘটনার জেরে মস্কোয় ব্রিটেনের দূতাবাসের এক আধিকারিককে ডেকে পাঠিয়েছে।
বস্তুত, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ব্রিটেন বার বার কিভের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সমর্থনে বেশ কিছু মন্তব্যও করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। জ়েলেনস্কি পুনরায় আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসলে তাঁকে সঙ্গ দিতে যেতে চান স্টার্মার। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে জ়েলেনস্কি ব্রিটেনে যান এবং বৈঠক করেন স্টার্মারের সঙ্গে। তার পরেই ইউক্রেনকে ২৮০ কোটি ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় ২৪ হাজার ৪০০ কোটির বেশি টাকা ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে এই অর্থসাহায্য, জানিয়েছে ব্রিটেন। পরে জ়েলেনস্কি জানান, এই অর্থ তাঁরা অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহার করবেন। কূটনৈতিক এই টানাপড়েনের আবহে ব্রিটেনের দুই কূটনীতিককে রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিল মস্কো।