Russia Ukraine War

পরবর্তী নিশানা কি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, ভয়ে ইউক্রেনবাসী

গতকাল গভীর রাতে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বার্তায় জ়েলেনস্কি দাবি করেন, নিপ্রো নদীতে মাইন ফেলেছে রুশ বাহিনী। তাদের পরবর্তী লক্ষ্য, নিপ্রো নদীর উপরে কাখোভকা ড্যাম।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কিভ শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৪৪
Share:

নিপ্রো নদীর উপরে কাখোভকা ড্যাম। ছবি রয়টার্স।

গত আট মাসের যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত ইউক্রেন। পূর্ব ও দক্ষিণ অংশ কার্যত ধ্বংসস্তূপ। কার্যত খুঁড়িয়ে চলা দেশটার শেষ ভরসা হাতের লাঠিটাও এ বারে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টায় প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া। সামনে শীত। বরফে ঢেকে যাবে দেশটা। বিদ্যুৎ ছাড়া জীবনধারণ অসম্ভব। এ অবস্থায় পাওয়ার গ্রিডগুলিতে হামলা শুরু করেছে তারা। ইউক্রেনের ৪০ শতাংশ পাওয়ারগ্রিড ইতিমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, মস্কোর পরবর্তী নিশানা একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প লাগোয়া জলাধার। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানান এই ‘ষড়যন্ত্রের’ কথা। সতর্ক করেছেন, রাশিয়া যদি এই কাজ করে, তা বড়সড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।

Advertisement

গতকাল গভীর রাতে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বার্তায় জ়েলেনস্কি দাবি করেন, নিপ্রো নদীতে মাইন ফেলেছে রুশ বাহিনী। তাদের পরবর্তী লক্ষ্য, নিপ্রো নদীর উপরে কাখোভকা ড্যাম। জলাধারটি রুশ নিয়ন্ত্রিত এলাকাতে রয়েছে। কিন্তু ক্রমশ সে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। কাখোভকা ড্যাম মস্কোর হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। জ়েলেনস্কির দাবি, তার জন্যই পাল্টা রণকৌশল নিয়েছে ক্রেমলিন। তারা উল্টে অভিযোগ করা শুরু করছে, কাখোভকা ড্যাম লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে কিভের সেনা। জ়েলেনস্কি বলেন, এই জলাধার যদি কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা হলে দেশের দক্ষিণ অংশে জলসরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। জ়াপোরিজিয়ায় ইউরোপের সর্ববৃহৎ পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও জলের অভাবে বসে যাবে। জ়েলেনস্কির কথায়, ‘‘এই জলাধারে যে পরিমাণ জল ধরে, তাতে এটি বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হলে খেরসন-সহ ৮০টি এলাকা জলের তলায় চলে যাবে। ভয়াবহ বন্যা দেখা দেবে। হাজার হাজার মানুষের চরম পরিণতি হবে।’’ এ ছাড়াও নর্থ ক্রাইমিয়ান ক্যানাল সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হবে। তাতে জলহীন হয়ে যাবে ক্রাইমিয়াও। কারণ ক্রাইমিয়ার ৮০% জল সরবরাহ হয় এই ক্যানাল দিয়ে।

আংশিক ভাবে অধিকৃত খেরসনে কাখোভকা ড্যাম রাশিয়ার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। নিপ্রো নদীর চারপাশের অঞ্চলে পৌঁছনোর জন্য এই জলাধারটিই একমাত্র পথ খোলা রয়েছে তাদের জন্য। তারা সত্যিই এ কাজ করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ইউক্রেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়ার নিযুক্ত খেরসন প্রশাসন। উল্টে তারা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, অ্যান্টোনিভস্কি সেতুতে ইউক্রেনের হামলায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে এক জন একটি টিভি চ্যানেলের প্রধান।

Advertisement

রাশিয়া এ সপ্তাহে দাবি করেছে, ইউক্রেনের হামলার জেরে খেরসন থেকে লোকজন সরিয়ে নিচ্ছে তারা। স্থানান্তরিত লোকজনের মধ্যে রয়েছে রুশ প্রশাসনের কর্তারা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। কিভের দাবি, এই সব মানুষকে আসলে ‘যুদ্ধবন্দি’ করতে চায় রাশিয়া। প্রয়োজনে তাঁদের মানববর্ম করতেও পিছপা হবে না মস্কো। রুশ সেনা কমান্ডার জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনের দাবি, ইউক্রেনের সেনা খেরসনে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement