লড়তে চান না! পুতিনকে ঘিরে জল্পনা

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন থেকে সন্ন্যাস নিতে চাইছেন পুতিন। তাঁর মনে হচ্ছে, সে ভাবে আর জনপ্রিয় নন তিনি। তাই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত। আসন্ন ভোটের প্রচার পর্বও শুরু করেননি এখনও। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে ক্রেমলিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মস্কো শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র।

তিনি ভোটে দাঁড়ালেই বিপুল ভোটে জিতবেন, এমন পূর্বাভাসই দিয়ে রেখেছে গোটা বিশ্বের সংবাদমাধ্যম। দেশের জনমত সমীক্ষাতেও ধরা পড়েছিল একই ছবি। কিন্তু আগামী বছরের গোড়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি নাকি দাঁড়াতেই চাইছেন না। সে জন্যই এখনও পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তালিকায় নিজের নাম ঘোষণা করেননি তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ঘিরে এখন জল্পনা ঘুরে বেড়াচ্ছে মস্কোর অলি-গলিতে।

Advertisement

একটি ব্রিটিশ অনলাইন খবরের ওয়েবসাইট সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছে। তাদের দাবি, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন থেকে সন্ন্যাস নিতে চাইছেন পুতিন। তাঁর মনে হচ্ছে, সে ভাবে আর জনপ্রিয় নন তিনি। তাই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত। আসন্ন ভোটের প্রচার পর্বও শুরু করেননি এখনও। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে ক্রেমলিন। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করতে পুতিন এত দেরি করছেন কেন, তার সদুত্তর দিতে পারেননি কেউই। তবে তাঁর এই টালবাহানায় সরকারের অন্দরে বিস্তর গোলমাল শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর।

পড়তি জনপ্রিয়তার পিছনে গত কয়েক বছরের আর্থিক মন্দাকেই নাকি দুষেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এখন অবস্থা সামাল দেওয়া গেলেও শাসক শিবিরের একাধিক ব্যক্তিত্বকে দুর্নীতির দায়ে বিদ্ধ করছেন বিরোধীরা। খুব সম্প্রতি পুতিনের বিরুদ্ধে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় টিভি তারকা কেসিনিয়া সবচাক। পুতিনের রাজনৈতিক গুরুর কন্যা কেসিনিয়া সরাসরি বলেছেন, ‘‘দেশের মানুষ এখন অন্য মুখ চান।’’

Advertisement

রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী মার্চে। নিয়ম মতো আগামী ডিসেম্বরের মাঝামাঝির মধ্যে সব প্রার্থীকেই নিজেদের নাম তালিকায় তুলতে হবে। তার পরেই শুরু হবে জোরকদমে প্রচার পর্ব। কিন্তু আপাতত নাকি এ সবের থেকেই নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন পুতিন। তবে ওই সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, এটাই প্রথম বার নয়। গত বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাস নাগাদই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ভেবে রেখেছিলেন পুতিন। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল ক্রেমলিনের। কথা ছিল সংবিধান সংশোধন করে ভাইস প্রেসিডেন্টের একটি নতুন পদ তৈরি করার। পুতিন চাইছিলেন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ভাগ করে দিতে। কিছু ক্ষমতা ভাইস প্রেসিডেন্ট, কিছুটা পলিটব্যুরোর হাতে রাখার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। গত ডিসেম্বরেই একটি ছোট ভোট করার ভাবনাও ছিল তাঁর। কিন্তু সে সমস্ত পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের গদিতে ট্রাম্প বসার পরেই পুতিন নিজের সিদ্ধান্ত পাল্টান। মার্কিন ভোটে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে জল্পনা শুরু হওয়ায় ক্রেমলিনের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কও তার পর থেকে অন্য খাতে বইতে শুরু করে।

পুতিন সরে দাঁড়ালে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণ কী হতে চলেছে, তা ভেবেই শঙ্কিত ক্রেমলিন। এক আধিকারিক যেমন বললেন, ‘‘শেষ বার এমন হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার সময়। তখন কেমন যেন একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। এখনও অবস্থাটা সে রকমই। দেশকে এত দিন ধরে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছেন যিনি, তিনি আচমকা সরে গেলে গোটা ব্যবস্থাটাই তালগোল পাকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’’ এই অবস্থায় আগামী ডিসেম্বরের দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব। পুতিন ফের প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে রাজি হলেন কি না, জানা যাবে তখনই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement