প্রতীকী চিত্র
ইরাকে ফের নিশানায় মার্কিন বাহিনী। আজ ভোর রাতে বাগদাদের কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা হাই প্রোফাইল ‘গ্রিন জ়োন’-এ ধারাবাহিক রকেট হামলা চলে। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ছাড়াও এই এলাকায় রয়েছে ইরাকে আমেরিকার সেনাবাহিনীর মূল ঘাঁটিও। গত কয়েক মাসে বারবার আক্রমণ চলেছে মার্কিন বাহিনীর উপরে। মার্কিন সেনার দাবি, আজকের হামলার নিশানাতেও ছিল সেই ঘাঁটিটিই। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই রয়েছে মার্কিন দূতাবাস। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলেই জানিয়েছে ইরাক ও আমেরিকার সেনা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সামান্য।
ইরাকে মার্কিন সেনা অভিযানের মুখপাত্র কর্নেল মাইলস বি ক্যাগিনস জানিয়েছেন, আজ ভোর রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ পর পর তিনটি রকেট আছড়ে পড়ে ‘ইউনিয়ন থ্রি’ ঘাঁটির কাছে। ২০১৪ সাল থেকে এখানেই থাকেন মার্কিন সেনারা। চতুর্থ রকেটটি আছড়ে পড়েছে ইরাকি সামরিক গোষ্ঠী হাশেদ আল-শাবি-র একটি ঘাঁটির কাছে। ইরাকি সরকার ওই গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দিলেও আমেরিকা এই সংগঠনকে বহু দিন আগেই জঙ্গি আখ্যা দিয়েছে। ইরাক ছাড়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে মার্কিন সেনাকে হুমকি দিয়ে থাকে এই সংগঠন ও তার শাখা সংগঠনগুলি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সে দিক থেকে দেখতে গেলে একইসঙ্গে মার্কিন সেনা ও হাশেদ আল-শাবি-র ঘাঁটিতে হামলা নজিরবিহীন ঘটনা।
আইএসের সঙ্গে লড়তে এখনও প্রায় পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছেন ইরাকে। কিন্তু গত মাসে বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি সেনা কর্তা কাসেম সোলেমানি ও তাঁর ডান হাত আবু মেহদি আল-মুহান্দিসের মৃত্যুর পরে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। এই হামলার জেরেই দেশ থেকে বিদেশি সেনা সরানো নিয়ে একটি বিল পাশ হয় ইরাকের পার্লামেন্টে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ইরাক থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে মার্কিন সেনাবাহিনীকে একাধিক বার হুঁশিয়ারি দিয়েছে হাশেদ আল-শাবি। সম্প্রতি হাশেদ সমর্থিত হরকত আল-নুজাবা মার্কিন বাহিনীর উদ্দেশে বলেছিল, ‘কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে।’ অর্থাৎ মার্কিন বাহিনীকে খুব শীঘ্রই ইরাক ছাড়তে হবে। তাদেরই এক শীর্ষ কমান্ডার টুইটারে আবার মার্কিন সেনাবাহিনীর গাড়ির ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘‘তোমরা যতটা ভাবছ, তার থেকেও কাছে এসে গিয়েছি আমরা।’’ তবে আজকের হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনও সংগঠনই। ধোঁয়াশায় ইরাকি পুলিশও।
গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইরাকে ১৯ বার হামলা হয়েছে মার্কিন বাহিনীর উপরে। বাদ পড়েনি দূতাবাসও।