চিনা মুখপত্রের আক্রমণের নিশানায় এ বার সরাসরি মোদী। নিশানায় ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’ও। —ফাইল চিত্র।
ফের ভারতকে আক্রমণ করল চিনের সংবাদমাধ্যম। শাসক কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করা হয়েছে। ভারতে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’ ক্রমশ বাড়ছে বলে সেখানে লেখা হয়েছে। এই ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’ই ভারতকে ফের চিনের সঙ্গে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে— গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে এমনও লেখা হয়েছে। জাতীয়তাবাদীদের চাপেই নরেন্দ্র মোদীর সরকার সীমান্তে চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়াতে চাইছে বলেও চিনা সংবাদমাধ্যমের মত।
ডোকলামকে ঘিরে ভারত এবং চিনের মধ্যে যে টানাপড়েন চলছে, চিনা মুখপত্রে স্বাভাবিক ভাবেই তার জন্য ভারতকে দায়ী করা হচ্ছে। রোজ সেখানে ভারতের সমালোচন প্রকাশিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে চিনা বিশেষজ্ঞ নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করেছেন, ভারত এ বার কেন চিনের বিরুদ্ধে এমন অবস্থান নিয়েছে। গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনের শিরোনামটি পড়লেই সে ব্যাখ্যার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। শিরোনামটি হল— ‘হিন্দু ন্যাশনালিজম রিস্কস পুশিং ইন্ডিয়া ইনটু ওয়ার উইথ চায়না’। অর্থাৎ, ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ চিনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে ভারতকে’।
প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, সীমান্তে ভারত এবং চিনের মধ্যে যে সঙ্ঘাত চলছে, নিজের দেশের ধর্মীয় জাতীয়তাবাদীদের খুশি করার জন্যই নরেন্দ্র মোদীর সরকার সে সঙ্ঘাতের জন্ম দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদী বসার পর থেকেই ভারতে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’দের বাড়বাড়ন্ত বলে চিনের দাবি। চিন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক কঠোর অবস্থান নিক, এমনটাই এই জাতীয়তাবাদীরা চান বলে সেখানে লেখা হয়েছে। ভারতের জাতীয়তাবাদীরা এখন ১৯৬২-র পরাজয়ের ‘প্রতিশোধ’ চান এবং সেই কারণেই সীমান্তে চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাত বাড়িয়ে তুলছে ভারত। মত চিনা মিডিয়ার।
হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের খুশি করার তাগিদেই চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাত বাড়িয়ে তুলছেন মোদী। মত চিনা মুখপত্রের। ছবি: পিটিআই।
নরেন্দ্র মোদীকেও তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনটিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘ক্রমবর্ধমান হিন্দু জাতীয়তাবাদের সুযোগ নিয়ে মোদী ক্ষমতায় এসেছেন।’’ সেই কারণেই এই জাতীয়তাবাদীদের মোদী খুশি রাখতে চাইছেন বলে চিনা মিডিয়ার ব্যাখ্যা। জাতীয়তাবাদীরা ভারতের চিন-নীতিকে ‘অপহরণ’ করে নিয়েছে বলেও গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতা ভারতের রয়েছে: চিনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সুষমা
চিনা সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, ‘‘... ভারতের চিন-নীতি যে ভাবে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদের হাতে বন্দি হয়ে পড়ছে, তা রোখার কোনও পথ ভারতের কৌশল প্রণেতা বা রাজনীতিকরা খুঁজে বার করতে পারেননি।’’ গ্লোবাল টাইমসের সতর্কবার্তা, ‘‘এতে ভারতের নিজের স্বার্থই বিঘ্নিত হবে। ভারতের সতর্ক হওয়া উচিত এবং ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের কারণে দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়া কাম্য নয়।’’