ঋষি সুনক। ছবি: পিটিআই
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে গত ২৫ অক্টোবর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মিশরে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (সিওপি২৭) যোগ দেওয়া নিয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে মত বদলাতে দেখা গিয়েছে ঋষি সুনককে। প্রথমে যোগ দেবেন না বলার পরেই বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছিল নানা আলোচনা। পরে মত বদলে সম্মেলনে যোগ দেওয়ায় সেই জল্পনা কিঞ্চিত ঠান্ডা হলেও সোমবার সম্মেলনের একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন তিনি হঠাৎ মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় ফের জল্পনার আগুনে ঘৃতাহুতি।
ব্রিটেনের এক সাংবাদিক টুইটারে শেয়ার করেছেন ঋষির হঠাৎ করে মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সেই ভিডিয়ো। তিনি লিখেছেন, মঞ্চ ছাড়ার মিনিট দুয়েক আগে তাঁকে এক সহযোগী এসে তাঁকে কিছু জানান। সেটা শুনেও অবশ্য সুনক বসেছিলেন। কিন্তু মিনিটখানেকের মধ্যে অন্য এক সহযোগী এসে তাঁকে কিছু বললে তিনি উঠে বেরিয়ে যান। ডাউনিং স্ট্রিটের তরফে অবশ্য কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সাংবাদিকদের একাংশের দাবি, ডাউনিং স্ট্রিটের সূত্র জানিয়েছে, জার্মান ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করতেই ও ভাবে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ঋষি। নিছক দেরিতে নেওয়া এই দেখা করার সিদ্ধান্তই তাঁর ওই ভাবে বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।
সোমবার ছিল সিওপি২৭ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন। গত ৬ নভেম্বর থেকে মিশরের শর্ম এল-শেখ শহরে শুরু হয়েছে এই অধিবেশন। চলবে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। ভারতের তরফে যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। গুজরাত নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত থাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বারের অধিবেশনে যোগ দেননি। অধিবেশন সূত্রে খবর, ভারতের মাথাপিছু কার্বন নির্গমনের হার বিশ্বের গড়ের তুলনায় অনেকটাই নীচে। তবে কার্বন নির্গমনে উল্লেখযোগ্য অন্য দেশগুলিতে সেই হার গড়ের থেকে অনেকটাই বেশি। ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম ‘এমিশনস গ্যাপ রিপোর্ট ২০২২: দ্য ক্লোজিং উইন্ডো’ নামে ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের জলবায়ু অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে কূটনীতিকদের দাবি, জলবায়ু নয়, তাঁর কাছে বরাবর বেশি গুরুত্ব পেয়ে এসেছে অবৈধ অভিবাসন সমস্যাটি। সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ ও ইটালির দক্ষিণপন্থী প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েই আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। গত সিওপি থেকেই বিরোধীদের দাবি, ব্রিটেনের কার্বন নিঃসরণ কমানো নিয়েও তিনি কখনওই কোনও প্রতিশ্রুতি দেন না।
এ দিকে, টেসলা কর্ণধার ইলন মাস্ক টুইটার কিনে নেওয়ায় পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, পরিবেশ-সহ বিভিন্ন বিষয়ের ভুল তথ্যের আখড়া হয়ে উঠবে এ বার টুইটার। টুইটার কেনার পরেই বহু কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন ইলন। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, এ ভাবে কর্মী কমলে বাড়বে ভুল তথ্যের প্রচার।