ঘরের ছেলে ঘরে ফিরুক। প্রার্থনা তাইল্যান্ডের চিয়াং রাই প্রদেশে। বৃহস্পতিবার। এএফপি
সারাদিন সারারাত বড় বড় পাম্প চলছে। গত দু’দিনে গুহা থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ জল পাম্প করে বের করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও এখনও যা জল রয়েছে, তা উদ্ধারকাজ চালানোর পক্ষে যথেষ্ট বেশি। তার উপরে চোখ রাঙাচ্ছে বর্ষা। থাম লুয়াং ন্যাং নন গুহায় কিশোর ফুটবল দলের বন্দিদশা কবে ঘুচবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
প্রাথমিক ভাবে, উদ্ধারকারীদের সামনে এখন চারটি রাস্তা খোলা। প্রথম, জল নামার জন্য অপেক্ষা করা। ইতিমধ্যেই গুহা থেকে বেশ খানিকটা জল পাম্প করে বের করে দেওয়া গিয়েছে। তবে তাইল্যান্ডে বর্ষাকাল শুরুর মুখে। শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও মিলেছে। তার ফলে গুহার ভিতরের জল কমার বদলে আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দ্বিতীয়, নতুন একটি পথ তৈরি করে বাচ্চাদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা। উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, তা প্রায় অসম্ভব। শুরু থেকেই গুহার আশপাশে বিকল্প পথ খোঁজার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। ফুটবল দলটি যেখানে আটকা পড়েছে, সেখানে তেমন কোনও রাস্তা নেই
বলেই দাবি তাঁদের। যদিও বা তাদের কাছাকাছি গিয়ে খোঁড়ার চেষ্টাও করা হয়, সে ক্ষেত্রেও গুহার রাস্তা
সংকীর্ণ হয়ে যাবে।
তৃতীয় রাস্তা, বন্দি ছেলেদের সাঁতার শেখানো এবং ওই জলের অংশটুকু পেরোনো। তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গুহার মধ্যে ওই ধরনের সাঁতার কাটা বাঘা বাঘা সাঁতারুদের পক্ষেও কঠিন। ফলে একেবারে সাঁতার না জানা খুদেদের পক্ষে তা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।
চতুর্থ পরিকল্পনা, যেটি বন্দি ছেলেদের জন্য তুলনামূলক ভাবে সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে, তা হল গোটা দলকে অক্সিজেন মুখোশ, শ্বাসপ্রশ্বাসের উপকরণ এবং হাইপোথার্মিয়া রুখতে বিশেষ জলরোধী জ্যাকেট পরিয়ে বের করে আনা। তবে গুহার ভিতরের একেকটি অংশ এতটাই সংকীর্ণ যে সেই পদ্ধতিতেও বিপদ রয়েছে। ঝুঁকি রুখতে প্রত্যেককে এক এক করে বের করে আনতে হবে। যাতে এক জনের জন্য গোটা দল বিপদে না পড়ে।
ইতিমধ্যেই ১২ জন খুদে ও তাদের কোচের জন্য মোট ১৩টি সাঁতার কাটার উপকরণের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকারী থেকে শুরু করে বন্দিদের পরিজন— গোটা বিশ্বের এই মুহূর্তে একটাই চাওয়া, আবহাওয়া একটু প্রসন্ন থাকুক। বৃষ্টি যেন না হয়!