শিশানি কি নিহত?
চেচনিয়ায় যে লড়াই শুরু হয়েছিল তা থামল ইরাকি শহর শিরাকত-এ। নিহত হলেন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর যুদ্ধমন্ত্রী আবু ওমর আল-শিশানি। শিশানি ওমর চেচেন নামেও পরিচিত। বাগদাদির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শিশানি মসুলের কাছে শিরকাত শহরে ইরাকি সেনার সঙ্গে লড়াই চলার সময়ে নিহত হন। একই সঙ্গে আরও বেশ কয়েক জন জেহাদিরও মৃত্যু হয়েছে। বুধবার আইএস সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। যদিও পেন্টাগন জানিয়েছে তারা সংবাদটি সত্যতা যাচাই করছে।
চলতি বছরের মার্চে বিমান হানায় শিশানির মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল পেন্টাগন। কিন্তু তখন আইএস সেই খবরের সত্যতা স্বীকার করেনি। কিন্তু এ দিন আইএস খবরটি প্রকাশ করার পরে জেহাদি মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। শিশানিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বার্তা বিনিময় চলছে। ইরাকি প্রশাসন এখনও খবরের সত্যতা জানাতে পারেনি। তবে অন্য সূত্রে খবর, মার্চের বিমান হানায় মারাত্মক জখম হয়েছিল শিশানি। সেই ক্ষত থেকেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে অনেকের ধারণা।
শিশানির মৃত্যু আইএস-এর পক্ষে বড় আঘাত। যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে শিশানির উপরে ভীষণভাবেই নির্ভর করতেন আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি। শিশানি প্রাক্তন সেনা কর্মী। ১৯৮৬ সালে জর্জিয়ায় জন্ম। চেচনিয়ায় লড়াইয়ের সময়ে শিশানি তাতে অংশ নিয়েছিলেন। তার পরে জর্জিয়ায় সেনায় নাম লেখান শিশানি। ২০০৬-এ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন। কিন্তু দু’বছর পরে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণে জর্জিয়ার সেনার চাকরি ছেড়ে দেয় তিনি। ২০১০-এ বেআইনিভাবে অস্ত্র রাখার অপরাধে এক বছরের জেল হয়। এর পরেই শিশানির জীবনে পরিবর্তন শুরু। ক্রমেই মৌলবাদী ইসলামের দিকে আকৃষ্ট হন শিশানি। ২০১২-এ জর্জিয়া ছেড়ে ইস্তানবুল চলে আসে শিশানি। এর পরে আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ওঠে।
২০১৪ সালে আইএস-এর উত্থানের সময় থেকেই শিশানির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আইএসের বেশ কিছু যুদ্ধ জয়ের পিছনে শিশানির রণকুশলী মস্তিষ্ক কাজ করেছে। রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা জেহাদিদের নিয়ে শিশানি আইএস-এর মধ্যে একটি আলাদা দল তৈরি করেন। নানা অভিযানে সেই দল সাফল্যও পেয়েছে। শিশানির মৃত্যু ইরাক ও সিরিয়ায় ক্রমেই জমি খোয়ানো আইএস-এর জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এতে জেহাদিদের মনোবলও চিড় খাবে। কিছু দিনের মধ্যে মসুল অভিযান শুরু করবে ইরাকি সেনা। শিশানির মৃত্যু তাঁদের পক্ষে অবশ্যই সুসংবাদ।