এর আগে আফগানিস্তানে প্রথম দফার তালিবানি শাসনে বোরখা না পরে এবং পুরুষ সঙ্গী ছাড়া রাস্তায় বেরনোতেও বাধা ছিল। ফাইল চিত্র।
চাকরি করতে দিলে বোরখাও পরবেন, সমস্বরে জানালেন আফগান মহিলারা। তালিবদের প্রতি এক বিশেষ বার্তায় তাঁরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখার ‘অপছন্দের শর্তে’ রাজি হতেও তাঁদের আপত্তি নেই। তবে মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে ফেরার অধিকার দিতে হবে। সন্তানদের স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করার প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে।
তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের হেরাটে বৃহস্পতিবার এই দাবিতেই এক প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেন ৫০ জন আফগান মহিলা। তালিবান তাঁদের বাধা দিয়েছে বলে শোনা যায়নি। তবে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের অধিকার বুঝে নিতে এসেছেন এবং অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। যদিও এ ব্যাপারে তালিবদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবারই আফগানিস্তানের একটি টিভি চ্যানেল তাদের মহিলা সঞ্চালককে নিয়ে সকালের অনুষ্ঠান নতুন করে সম্প্রচার শুরু করে। অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার হওয়ার পর অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন, তা হলে কি মেয়েরা কাজে ফিরছেন? অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকার নিজেকে আপাদমস্তক বোরখায় ঢেকে রাখা দেখে অনেকে এ-কথাও জানতে চান, তবে কি মেয়েদের এ ভাবেই চাকরিতে ফিরতে হবে? হেরাটে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী আফগান মহিলারা অবশ্য বলেছেন, ‘‘ওরা যদি আমাদের বোরখা পরতেও বলে, তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের কাজে ফিরতে দেওয়া হোক। মেয়েদের স্কুলে যেতে দেওয়া হোক।’’
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের অধিকার বুঝে নিতে এসেছেন এবং অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ছবি: সংগৃহীত
এর আগে আফগানিস্তানে তালিবানি শাসনের প্রথম দফায় মহিলাদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়া এবং শিক্ষার অধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তালিবান। বোরখা না পরে এবং পুরুষ সঙ্গী ছাড়া রাস্তায় বেরনোতেও বাধা ছিল। হেরাটের বিক্ষোভকারীদের একজন মারিয়ম এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘তালিবান আর আগের মতো নেই বলে দাবি করছে বটে। তবে দ্বিতীয় দফায় পরিস্থিতির কোনও উন্নতি নজরে পড়ছে না। নিরাপত্তার অভাবে এখনও হেরাটের প্রায় সব মহিলাই ঘরবন্দি। চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত যে সমস্ত মেয়েদের পরিস্থিতির প্রয়োজনে কাজে ফিরতেই হয়েছে, তাঁদের নিয়ত তালিবানি শাসানি, রক্তচক্ষু এবং ব্যঙ্গের শিকার হতে হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পড়াশোনা শুরু হলেও তালিবান জানিয়েছে, সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী স্তরের স্কুল শিক্ষা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।