এই সেই ময়াল। ছবি: এএফপি।
কাঁটা বেছে খাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ও’সব ওদের ধাতে নেই। বরং সবসুদ্ধ গিলে খাওয়াটাই ময়ালের স্বভাব। আর হলও তাই। সামনে জলজ্যন্ত আর হৃষ্টপুষ্ট একখানা শজারু দেখে লোভ সামলাতে পারেনি সে। বেমালুম গিলে ফেলেছিল। আর তার পরই খেল খতম প্রায় ১৩ ফুট লম্বা সেই ময়াল সাপের। ঘাতক এ বারও সেই ‘শজারুর কাঁটা’। প্রাণিবিজ্ঞানীদের একটা অংশ অবশ্য বলছেন, শজারু ময়ালের স্বাভাবিক খাদ্যতালিকার মধ্যেই পড়ে। তাই এ ভাবে মরাটা স্বাভাবিক নয় মোটেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার এক অভয়ারণ্যে সপ্তাহ দুয়েক আগের ঘটনা। বিষয়টি প্রথম নজরে আসে এক সাইকেল আরোহীর। ডারবান শহর থেকে প্রায় একশো মাইল দূরের এই অভয়ারণ্যে দলের সঙ্গে সাইকেল চালাচ্ছিলেন সেই ভদ্রলোক। হঠাৎই চোখে পড়ে, পেট-ফোলা একটা ময়াল। তখনও অবশ্য বোঝা যায়নি যে সাপটি খানিক আগে আস্ত একটা শজারুই গিলে ফেলেছে। তিনি ভেবেছিলেন, হরিণ জাতীয় কোনও প্রাণি রয়েছে ময়ালের পেটে। উৎসাহী হয়ে ভদ্রলোক সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি-সহ তা পোস্টও করে দেন। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যায় ময়ালটি। ভিড় জমতে থাকে অভয়ারণ্যে।
সেই আজব আকর্ষণ অবশ্য দিন সাতেকের বেশি টেকেনি। হঠাৎই মারা যায় ময়ালটি। তখনও তার পেট-ফোলা! সন্দেহ জাগে কর্তৃপক্ষের। লম্বা শিঙওয়ালা হরিণ জাতীয় প্রাণিও তো হামেশাই খেয়ে হজম করে ফেলে এই ময়াল। তা হলে?
ময়নাতদন্ত করা হয় মৃত ময়ালের। বেরিয়ে আসে প্রায় ১৪ কিলো ওজনের একটা আস্ত শজারু। দেখা যায়, ভয়ানক ক্ষতবিক্ষত ময়ালের পাকস্থলি। চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, শজারুর কাঁটা ফুটেই ময়ালের এই হাল। অন্য অংশ অবশ্য মৃত্যুর এই কারণটা মানতে পারছেন না। তাঁদের বক্তব্য, শজারু হজম করতে ওদের বড় জোর সপ্তাহ খানেক সময় লাগে। বরং মানুষের অতিরিক্ত আগ্রহই শেষ পর্যন্ত কাল হল। কিন্তু কী ভাবে?
তাঁদের অভিযোগ, মানুষের ভিড় দেখেই ভ়ড়কে যায় ময়ালটি। সাধারণত গিলে ফেলার পর সেই প্রাণিকে হজম করতে বেশ কিছু দিন সময় লাগে ময়ালের। আর কোনও কারণে তা হজম না হলে উগরে দেয় তারা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উগরোতে পারেনি বলেই এই বিপত্তি। তবে কাঁটা ফুটে পাকস্থলি জখম হওয়ার তত্ত্বটিও তাঁরা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।