সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় কিছুটা থিতিয়েছিল বিক্ষোভ। তবু পৌঁছনো গেল না ঐকমত্যে। যার ফলে আজ নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠল ইসলামাবাদ। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ইস্তফার দাবিতে তাঁর বাসভবন ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে গভীর রাত পর্যন্ত অন্তত ৭ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে অসমর্থিত সূত্রের খবর। আহত প্রায় ৭০। এমনকী পাক পার্লামেন্টের দরজা ভেঙে বিক্ষোভকারীরা ভিতরে ঢুকে পড়েন। শরিফ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, চাপ যতই আসুক, তিনি পদত্যাগ করছেন না। বিক্ষোভ সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনা।
শরিফের বিরুদ্ধে কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার অভিযোগ তুলে গত দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সমর্থকদের নিয়ে ইসলামাবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ইমরান খান। সঙ্গে যোগ দেন আর এক বিরোধী নেতা তাহির উল কাদরি ও তাঁর সমর্থকেরা। রাজধানীর যে অঞ্চলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলি রয়েছে, সেই রেড জোনে ঢুকে পড়ে পার্লামেন্টের অদূরে ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন দুই নেতা। গত কালই শরিফ সরকার এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে প্রথম সরাসরি কথা হয়। বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় বিক্ষোভ কর্মসূচি জারি রাখার সিদ্ধান্ত নেন বিরোধীরা।
শুক্রবার গভীর রাতে কাদরির কাছে আসেন তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিনিধিরা। বৈঠকের পরেই শরিফের পদত্যাগের জন্য নতুন করে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেন কাদরি। ইমরানের দল ঘোষণা করে, ইসলামাবাদের পর এ বার লাহৌর, করাচি, ফয়জলাবাদ, মুলতানের মতো শহরেও শরিফের পদত্যাগের দাবিতে ধর্নায় বসবেন দলীয় সমর্থকেরা। কাদরি তাঁর দলের সমর্থকদের ইমরানের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিতে বলেন।
আজ সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগোতে সমর্থকদের নির্দেশ দেন ইমরান। কন্টেনার ও কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল রেড জোনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলি। মোতায়েন ছিল দাঙ্গা পুলিশ। সঙ্গে আনা ক্রেন দিয়ে সেই কন্টেনার সরিয়ে এগোতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস, পরে রবার বুলেট ছোড়ে। সরকার পক্ষের দাবি, কয়েক জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আত্মরক্ষার্থেই পুলিশকে রবার বুলেট চালাতে হয়েছে। ঘটনাস্থলে টায়ার পোড়াতেও দেখা যায় কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে। পাক চ্যানেলগুলির দাবি, আহতদের হাসপাতাল থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শরিফ ইসলামাবাদ থেকে লাহৌর পৌঁছেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।