মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। —ফাইল চিত্র।
ভারতের তাৎক্ষণিক অর্থ লেনদেন ব্যবস্থা ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস (ইউপিআই) এ বার চালু হতে চলেছে মলদ্বীপেও। অনলাইনে টাকা লেনদেন করা বা কিছু কেনার জন্য ভারতে ইউপিআই ব্যবহার করা হয়। একই ব্যবস্থায় সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হচ্ছে প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতে এসেছিলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। মলদ্বীপকে ডিজিটাল এবং আর্থিক দিক থেকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে নয়াদিল্লি। তার পরেই মলদ্বীপের মন্ত্রিসভায় ভারতীয় ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
ইউপিআই হল ভারতের নিজস্ব তাৎক্ষণিক লেনদেন ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে সহজেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অনলাইনে অর্থ আদানপ্রদান করা যায়। নগদ অর্থ সঙ্গে না থাকলেও তাই আর্থিক লেনদেনে সমস্যা হয় না। মলদ্বীপে এই ব্যবস্থা চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটবে বলেই আশা করছে মুইজ্জু সরকার। আর্থিক লেনদেন বৃদ্ধির পাশাপাশি ডিজিটাল পরিকাঠামোও আগের চেয়ে উন্নত হবে এর ফলে। মুইজ্জু সরকারের তরফে একটি বিবৃতিতে এই সংক্রান্ত আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশে ইউপিআই চালু করার জন্য আগে একটি কেন্দ্রীয় সহায়তা ব্যবস্থা চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন মুইজ্জু। মলদ্বীপের সমস্ত ব্যাঙ্ক, টেলিকম সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে ওই ব্যবস্থার অধীনে আনা হবে। অর্থ মন্ত্রক, প্রযুক্তি মন্ত্রক-সহ একাধিক মন্ত্রককে ইউপিআই চালু করার বিষয়ে একত্রে কাজ করতে বলা হয়েছে।
এর আগে মুইজ্জু ভারত সফরের সময় মলদ্বীপে রুপে কার্ড চালু করেছিল নয়াদিল্লি। মলদ্বীপে প্রতি বছর যে ভারতীয় পর্যটকেরা যান, তাঁদের আর্থিক লেনদেনের সুবিধার জন্য এই কার্ড চালু করা হয়েছে। এতে সুবিধা হবে ভারতে আসা মলদ্বীপের পর্যটকদেরও।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বরে মলদ্বীপে ক্ষমতায় এসেছেন মুইজ্জু। দেশে তিনি ‘ভারত-বিরোধী’ হিসাবেই অধিক পরিচিত। ভারতের বিরোধিতা করে নির্বা চনী প্রচারও করেছিলেন মুইজ্জু। চিনের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর। ক্ষমতায় আসার পরেই চিন সফরে গিয়েছিলেন। ভারতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে এলেন অক্টোবরে, ক্ষমতায় আসার ১১ মাস পরে।
মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পরে ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। মোদীর লক্ষদ্বীপ সফরে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল মুইজ্জুর মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। তার পর ভারতে ‘বয়কট মলদ্বীপ’ রব ওঠে। পর্যটকদের তরফে মলদ্বীপের বহু টিকিটও বাতিল করে দেওয়া হয়। মলদ্বীপ থেকে এই সময়েই ভারতে সেনা সরিয়ে নিতে বলেন মুইজ্জু। সব মিলিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। তবে তাতে আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয় মলদ্বীপ। ভারত থেকে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক ওই দেশে যান। এর পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে মন দেয় মুইজ্জু সরকার।