Pope Francis

Ukraine: ইউক্রেন সেনার লড়াইকে কুর্নিশ পোপ ফ্রান্সিসের

রুশ সেনার অত্যাচারের সমালোচনা এবং ইউক্রেন বাহিনীর পরাক্রমের প্রশংসা করলেও পোপ মনে করেন, এই যুদ্ধের পিছনে অনেকের প্ররোচনা রয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কিভ শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২২ ০৫:৩৮
Share:

মচকালেও ভাঙছে না ইউক্রেন।

Advertisement

রাশিয়া অধিকৃত পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস এলাকায় কিভের শেষ ঘাঁটি সেভেরোডনেৎস্কে দিন দুই আগে ঢুকে পড়েছিল বিশাল রুশ বাহিনী। শহরের দখল নিয়েই সেভেরোডনেৎস্কথেকে ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছনোর প্রধান দুই সেতু উড়িয়ে দেয় তারা। পিছু হটতে বাধ্য হয় ইউক্রেনের সেনা। ঠিক মারিয়ুপোলের কায়দায় এই শিল্পশহরটাকেও চারিদিক থেকে বিচ্ছিন্ন করে চক্রব্যূহ তৈরির রণকৌশল নিয়েছে মস্কো। যাতে ইউক্রেনের সেনা এখান থেকে বেরোতে না পারে। ওঁদের সামনে এখন দু’টো রাস্তা। হয় আত্মসমর্পণ, না-হয় মৃত্যু। তবু আশা হারাচ্ছে না ইউক্রেন। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তারা লড়াই করে যাবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

আজ সেভেরোডনেৎস্কের প্রশাসন জানিয়েছে, এখনও শহরটাকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি রুশ সেনা। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তৃতীয় একটা সেতুপথে তা যুক্ত রয়েছে। যদিও সে পথ জটিল ও দুর্গম। শহরের প্রশাসনিক প্রধান ওলেকজ়ান্ডার স্ট্রুক বলেন, ‘‘শহর এখনও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন নয়। ইউক্রেন বাহিনী বীরবিক্রমে সবটুকু দিয়ে লড়ে যাচ্ছে।’’

Advertisement

ইউক্রেন সেনার এই লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। সম্প্রতি জেসুইটদের একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে পোপবলেছেন, ‘‘রাশিয়া ভেবেছিল এক সপ্তাহে যুদ্ধ মিটে যাবে। ওরা ভুল ভেবেছিল। ওরা এক দল সাহসী যোদ্ধার মুখোমুখি পডে গিয়েছে। যাঁরা বাঁচার জন্যে লড়াই করছেন। যাঁদের লড়াইয়ের একটা দীর্ঘইতিহাস রয়েছে।’’

রুশ সেনার অত্যাচারের সমালোচনা এবং ইউক্রেন বাহিনীর পরাক্রমের প্রশংসা করলেও পোপ মনে করেন, এই যুদ্ধের পিছনে অনেকের প্ররোচনা রয়েছে। সামনে থেকে যেমন দেখাচ্ছে, প্রকৃত পরিস্থিতি ঠিক ততটা সাদা বা কালো নয়। তিনি বলেন, ‘‘এই যুদ্ধের পিছনে কারও প্ররোচনা থাকতে পারে। নির্মম, নির্দয় রুশ সেনার অত্যাচারে আমরা সমস্যার আসল কারণগুলো যেন ভুলে না যাই।’’ এ বিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবসা, রাজনৈতিক-ভৌগোলিক কারণ ইত্যাদির দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।

তবে পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধার নয়। ইউক্রেনের অস্ত্রের ভাঁড়ারে টান পড়েছে। দিন সাতেক ধরে তারা পশ্চিমি দেশগুলির কাছে অস্ত্র-সাহায্য চাইছে। পর্যাপ্ত অস্ত্রের জোগানপেলে জয়লাভ যে সম্ভব, এ কথা গত কাল রাতেই বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তাঁর উপদেষ্টা মিখাইলোপোডোল্যাক টুইট করে বলেন, ‘কয়েকশো হাউইৎজ়ার, ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি চাই আমাদের।’

অন্য দিকে, পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন ডনবাসের রুশ মদতপুষ্ট, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের শীর্ষ নেতা ডেনিস পুশিলিন। তিনি বলেছেন, ‘‘শত্রুপক্ষকে ঠেকাতে রাশিয়া-সহ আমাদের সমস্ত জোট এক হয়েলড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইউক্রেনকে হারাতে মস্কোর কাছে আরও বেশি করে সেনা সাহায্য চেয়েছিলেন পুশিলিন। তার পরে এই যুদ্ধের লক্ষ্য নিয়ে আরও এক বার মুখ খুলল মস্কো। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, ‘‘ডনেৎস্ক আর লুহানস্কের মানুষকে বাঁচাতেই তাঁদের এই যুদ্ধ।’’

এই যুদ্ধের প্রভাব শুধু ইউক্রেন নয় গোটা ইউরোপেই পড়ছে। আগামী দিনে এর সুদূরপ্রসারী ফল নিয়ে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ লিসবনে ইইউয়ের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংস্থা তাদের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে, যুদ্ধের ফলে প্রচুর মানুষ মানসিক চাপ ও অবসাদে ভুগতে পারেন। তাঁদের অনেকের মাদক নেওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। ফলে আগামী দিনে ইউরোপে মাদক সংক্রান্ত সমস্যা বাড়ারআশঙ্কা রয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement