এ রকমই একটি টিয়াপাখির ডাককে মহিলার আর্তনাদ ভেবে ভুল করেন প্রতিবেশী। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বাড়িতে বসেই শুনেছিলেন মহিলার পরিত্রাহি চিৎকার। ঘাবড়ে গিয়ে পুলিশকে ফোন করেন ইংল্যান্ডের ক্যানভে আইল্যান্ডের বাসিন্দা। ফোন পেয়েই তিনটি গাড়ি নিয়ে স্টিভ উডের বাড়ির দিকে রওনা হয় এসেক্স পুলিশ। কিন্তু অকুস্থলে পৌঁছে তাঁরা যা দেখলেন, তাতে হতবাক সকলেই। পরিত্রাহি চিৎকার কোনও মহিলার গলা থেকে বেরোচ্ছে না, আসলে এটি একটি টিয়াপাখির কীর্তি!
ক্যানভে আইল্যান্ডের বাসিন্দা স্টিভের পাখির নেশা। অনেক সময়ই আহত পাখিকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতেই সুস্থ করে তোলেন। তার পর ছেড়ে দেন আকাশে। এ ভাবেই স্টিভের বাড়িতে একাধিক পাখি রয়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই একটি টিয়াপাখি একটু বেশি মুখরা। সে মহিলাদের গলা নকল করে ডাকাডাকি করে প্রায় প্রতি দিন সকালে। গত মঙ্গলবার সকালেও তেমনই ঘটে। কিন্তু সেই আওয়াজে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন স্টিভের এক প্রতিবেশী। ডাক শুনে তিনি ভাবেন, কোনও মহিলা হয়তো বিপদে পড়েছেন। তাই পরিত্রাহি চিৎকার করছেন। কোনও উপায় না দেখে সেই প্রতিবেশী পুলিশে ফোন করেন। বলেন, ‘‘বাড়িতে বসে আমি এক মহিলার তারস্বরে আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি। দ্রুত আসুন, যদি তাঁকে বাঁচানো যায়।’’
এই বার্তা পেয়ে এসেক্স পুলিশ তড়িঘড়ি রওনা দেয় ক্যানভে আইল্যান্ডের দিকে। পর পর তিনটি গাড়ি নিয়ে পুলিশ পৌঁছয় অকুস্থলে। স্টিভের বাড়িতে ঢুকতেই রহস্যের পর্দাফাঁস। দেখা যায়, বারান্দায় ঝোলানো খাঁচায় বসে নিশ্চিন্তে হাক ছাড়ছে একটি টিয়াপাখি। এর মধ্যেই পুলিশ আসার খবর পেয়ে দরজা খোলেন স্টিভ। পুলিশ দেখে তাঁর চোখেমুখেও আতঙ্কের ছায়া। কিন্তু পুলিশই হেসে ওঠে।
সব মেটার পর স্টিভ বলেন, ‘‘সাত সকালে বাড়িতে এত পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভাবছিলাম, কী করে ফেললাম আমি যে, এত পুলিশ বাড়িতে চলে এল! কিন্তু দরজা খুলতেই পুলিশ আধিকারিক আমাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনার পাখির ডাককে মহিলার আর্তনাদ ভেবে ভয় পেয়ে আমাদের ফোন করেছিলেন এক ব্যক্তি। তাই আমরা সরেজমিনে দেখতে এসেছি, ঘটনাটি কী।’’
স্টিভ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাঁর হেফাজতে থাকা পাখিগুলি সাধারণত সকালের দিকে একটু বেশি ডাকাডাকি করে। নির্দিষ্ট টিয়াপাখিটিও তেমনই করেছিল। আর তার জেরেই পাখির ডাককে মহিলার আর্তনাদ ভেবে পুলিশে ফোন করে হুলস্থুল বাধান এক প্রতিবেশী। প্রথমে ঘাবড়ে গেলেও স্টিভ বলছেন, ‘‘আসলে এখানে কারওই দোষ নেই। পাখির ডাককে মহিলার চিৎকার ভেবে প্রতিবেশী পুলিশে জানিয়েছিলেন। সেই ডাক পেয়ে পুলিশ আসে। এতে কারও দোষ নেই।’’