সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে অভিযুক্তের ছবি।
কুমিল্লার একটি পুজোমণ্ডপে রাতের অন্ধকারে অন্য ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ রেখে যাওয়া লোকটিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ। বুধবার তিনি বলেন, “সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে তাকে চিহ্নিত করার পরে পরিচয়ও মিলেছে। লোকটির নাম ইকবাল হোসেন (৩৫)। বাবার নাম নুর আহমেদ আলম। বাড়ি কুমিল্লা শহরের সুজানগরে।”
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সিসিটিভি-তে দুষ্কৃতীর ছবি ওঠার পরে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা তদন্তে নামে। তার পরেই এই অগ্রগতি। ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও সরকার প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন, পরিকল্পিত চক্রান্ত রয়েছে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অশান্তির পিছনে। গোয়েন্দারা দেখেছেন, আফগানিস্তানে তালিবান দখলদারি কায়েম হওয়ার পরে মাস দুয়েক ধরে ঢাকার পাকিস্তানি দূতাবাস এবং তাদের সহযোগীরা খুবই তৎপর। বুধবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট করতেই এই হামলা ও হিংসার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ কাজে বিরোধী দল বিএনপি-র হাত রয়েছে।”
সরকারের বর্ষীয়ান মন্ত্রী কাদেরের কথায়, “এ সব অপকর্ম ও নির্জলা মিথ্যার পেটেন্ট একমাত্র বিএনপির। বিএনপি সংখ্যালঘুদের শত্রু মনে করে। তারা ভেবেছে এই হামলার ফলে সরকারের উপর সংখ্যালঘুদের অনাস্থা বাড়বে, আর ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নষ্ট হবে।”
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির অবশ্য কাদেরের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি— সরকারি মদতেই মৌলবাদীরা অশান্তি করেছে। ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লিগ জোর করে, বেআইনি ভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা ক্ষমতাকে আরও দীর্ঘায়িত করার জন্য, অর্থাৎ আগামী নির্বাচনে যাতে তারা পার পেয়ে যেতে পারে, সে জন্য বিভিন্ন রকমের অপকৌশল গ্রহণ করতে শুরু করেছে— এটা তারই একটা প্রমাণ।”
সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের জানিয়েছেন, শুক্রবার ঢাকায় তাঁরা সম্প্রীতি সমাবেশ করে সাম্প্রতিক হিংসার প্রতিবাদ করবেন। তিনি ও দলের প্রধান সব নেতা এই সমাবেশে থাকবেন। কাদের বলেন, “বাংলাদেশে এমন হামলার ঐতিহ্য নেই। দীর্ঘকাল ধরে সব মানুষ এখানে পাশাপাশি বসবাস করেন। উৎসবে সবাই অংশ নেন। সেই ঐতিহ্য নষ্ট করতে দেওয়া হবে না।”