বাড়িতে তৈরি হয়েছে ডুবোজাহাজ। যিনি বানিয়েছেন, তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে তাঁর সঙ্গে সেই ডুবোজাহাজে সফরে বেরিয়েছিলেন কিম ওয়াল। এক দিনের মাথায় ফিরে আসার কথা ছিল সুইডেনের এই তরুণী সাংবাদিকের। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কিম না ফেরায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন কিমের প্রেমিক। ১১ দিন পরে মাথা বাদে কিমের দেহের নিম্নাঙ্গের ছিন্নভিন্ন অংশ মেলে কোপেনহাগেনের সমুদ্র উপকূলে। এ বার কোপেনহাগেনেরই দক্ষিণে কোজ বে-র কাছ থেকে মিলল তাঁর কাটা মুণ্ড ও পায়ের কিছু অংশ।
ডেনমার্কের পুলিশ জানিয়েছে, একটি ব্যাগের মধ্যে ছিল ও কিমের জামা-কাপড় ও দেহাংশ। গত কয়েক দিন কোপেনহাগেন উপকূলে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন ডুবুরিরা। ময়না-তদন্তের পরে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, ওই মাথাটি নিখোঁজ সাংবাদিক কিমেরই। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কিমের মাথার অংশটি খুঁজে পাওয়াটা খুব দরকার ছিল, না হলে ওই সাংবাদিকের মৃত্যুর আসল কারণ বোঝা যাচ্ছিল না।
পুলিশ জানিয়েছে, ৪৬ বছরের ড্যানিশ যুবক পিটার ম্যাডসেনের সঙ্গে গত ১০ অগস্ট ডুবোজাহাজে উঠেছিলেন কিম। পিটারের বানানো ডুবোজাহাজটি নিয়েই খবর করছিলেন তিনি। তাই পিটারের সাক্ষাৎকার নিতে আর জুবোজাহাজ কেমন তৈরি হয়েছে, নিজের চোখে সেটি দেখতে তাতে চড়েন ওই সাংবাদিক। কিন্তু তাঁর দেহের বিভিন্ন অংশের খোঁজ মিললেও কী ভাবে কিমের মৃত্যু হয়েছে, সে রহস্যের সমাধান হয়নি এখনও।
যদিও কিমের প্রেমিকের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তড়িঘড়ি পিটারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পিটার পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ডুবোজাহাজের একটি ভারী যন্ত্রাংশে মাথা ঠুকে মৃত্যু হয় কিমের। ভয় পেয়ে তিনি ওই সাংবাদিকের দেহ সমুদ্রে ভাসিয়ে দেন।
সেই সময় কিমের দেহ অবিকৃত ছিল বলেও দাবি করেছেন পিটার। কিন্তু পুলিশ জানিয়েছে, কিমের যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অথচ তাঁর মাথায় কোনও ভোঁতা অস্ত্র বা যন্ত্রের আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। যে ব্যাগে তাঁর মাথা মেলে, সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে ছুরি।
তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, কিমকে মারার পরে বিকৃতকাম পিটার তাঁর দেহের নানা টুকরো করে সেগুলি জলে ভাসিয়ে দেন। সরকারি কৌঁসুলি ডেনমার্কের আদালতে জানিয়েছেন, পিটারের ওয়ার্কশপ থেকে কিছু পেন ড্রাইভ মিলেছে যেখানে জীবন্ত মহিলাদের যৌন অত্যাচারের পরে তাঁদের দেহ টুকরো করে কেটে ফেলার দৃশ্য রয়েছে।
পিটার অবশ্য এই সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। পেন ড্রাইভগুলিও তাঁর নয় বলে আদালতকে জানিয়েছেন।