ইজরায়েলের কিং ডেভিড হোটেল। ছবি:এএফপি।
গুলি তো দূর অস্ত্, বোমার ঘায়েও কিছু হবে না। বিস্ফোরণের আঁচও পড়বে না কোনও ভাবে। এমনকী, কোনও রকমের রাসায়নিক হামলা হলেও সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে সুইটটি। ওই প্রেসিডেন্সিয়াল সুইটে প্রতি রাতে থাকার খরচ প্রায় ১ কোটি ৬ হাজার টাকা। প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ইজরায়েল সফররত নরেন্দ্র মোদীর জন্য এমন হোটেলেরই বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবারই ইজরায়েল পৌঁছেছেন মোদী। তেল আভিভের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে নামার পর থেকেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে তোড়জোড় শুরু করে দেয় সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই মতো তাঁর রাতে থাকার বন্দোবস্তও যথেষ্ট নিরাপদ এবং সুরক্ষিত করা হয়। জেরুজালেম শহরের ‘কিং ডেভিড হোটেল’-এর যে বিলাসবহুল সুইটটিতে মোদী থাকছেন, এখনও পর্যন্ত সেটি নাকি বিশ্বের সবথেকে নিরাপদ জায়গা। ওই হোটেল পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধাকারিক শেলডন রিৎজ তেমনটাই দাবি করেছেন। মোদীর গোটা সফরের যাবতীয় দায়িত্বও তাঁর কাঁধে। রিৎজে জানিয়েছেন, বোমা, রাসায়নিক-সহ যে কোনও হামলা বা বিস্ফোরণের হাত থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ওই সুইট।
আরও পড়ুন: ‘দোস্ত’ মোদী, হিন্দি বুলি নেতানিয়াহুর
১৯৪৬ সালে ওই হোটেলে এক বার সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়। সেই সময়ে বিস্ফোরণে কিং ডেভিড হোটেলের দক্ষিণ অংশ পুরোপুরি ধসে পড়ে। পরে হোটেলটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। তার বাইরের গোটা কাঠামোটি স্টিল এবং কংক্রিটের তৈরি। তার পর থেকে হোটেলের সব ক’টি জানলা বুলেট ও রকেট প্রুফ। এমনকী, হোটেলের এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমটি পুরোপুরি গ্যাস প্রুফ। হোটেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে ইজরায়েলের সবচেয়ে নামী এজেন্সি রয়েছে।
মোদী এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের জন্য বিলাসবহুল ওই হোটেলের ১১০টি ঘর খালি করে দেওয়া হয়েছে। রিৎজ জানিয়েছেন, বোমা বিস্ফোরণে যদি গোটা হোটেলটাই উড়ে যায়, ওই ঘরটিতে তার কোনও আঁচ পড়বে না। একা মোদী নন, এর আগে যে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ইজরায়েল সফর করেছেন তাঁদের জন্যও একই ব্যবস্থা করা হয়। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন, জর্জ ডব্লিউ বুশ থেকে বারাক ওবামা তো বটেই এবং সপ্তাহ তিনেক আগে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এখানে থেকেছেন।
ওই সুইটটির সঙ্গে রয়েছে আলাদা একটি রান্নাঘর। অতিথির কিছু খাওয়ার ইচ্ছা করলে, চটজলদি তা বানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী শাকাহারী। তাই তাঁর পছন্দের কুকিজ তৈরি হয়েছে ডিম ও চিনি ছাড়াই। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী গুজরাতি খাবার পছন্দ করেন বলে তাঁরা জেনেছেন। তাই তাঁর পছন্দের সব খাবারই তালিকায় রাখা হয়েছে।