ভুট্টাক্ষেতের মধ্যে সেই বিমান। ছবি: রয়টার্স
ওড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই এক ঝাঁক পাখির সঙ্গে ধাক্কা। যান্ত্রিক ত্রুটি এবং ইঞ্জিন বন্ধ। যে কোনও সময় ধ্বংস হতে পারে। এমন অবস্থাতে কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ২৩৩ জন যাত্রীকে প্রাণে বাঁচালেন রাশিয়ার এক পাইলট। অসীম সাহস আর দক্ষতায় ভুট্টাখেতের মধ্যেই জরুরি অবতরণ করালন বিশাল বিমান। বেশ কয়েক জন যাত্রী আহত হলেও এক জন বাদে কারও চোটই গুরুতর নয়। মস্কো শহরের অদূরের এই ঘটনার পরই কার্যত বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন দামির ইউসুপভ নামের ওই পাইলট।
বৃহস্পতিবার সকালে ২৩৩ জন যাত্রী নিয়ে মস্কোর ঝুকোভস্কি বিমানবন্দর থেকে ক্রিমিয়ার উদ্দেশে উড়েছিল এয়ারলাইন্সের বিমান এয়ারবাস-৩২১। কিন্তু ওড়ার কয়েক মুহূর্ত পরেই এক ঝাঁক সামুদ্রিক পাখি চলে আসে বিমানের সামনে। সেগুলির ধাক্কায় কার্যত বিকল হয়ে যায় বিমানের ইঞ্জিন। কাজ করছিল না ল্যান্ডিং গিয়ারও। ফলে বিমানবন্দরে ফিরে অবতরণ করা সম্ভব ছিল না।
এমন জরুরি অবস্থায় বিমানবন্দরের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি ভুট্টাখেতেই বিমান নামাতে বাধ্য হন পাইলট। বিমান নামার পরে দরজা খুলে দিতেই যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে বাইরে বেরিয়ে প্রাণপণে ছুটতে থাকেন। চলে আসেন নিরাপদ দূরত্বে। রাশিযার স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনায় ২৩ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। তবে কারও মৃত্যু হয়নি। পরে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা গিয়ে আহত ও অসুস্থ যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমের দাবি, আহতদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাশিয়ার বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের মুখপাত্র ইলিনা মিখেয়াভা জানিয়েছেন, পাখির ঝাঁকের সঙ্গে ধাক্কার পর বিমানের দু’টি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যায়। ফলে ল্যান্ডিং গিয়ারও কাজ করেনি। স্থানীয় টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে ওই বিমানের এক যাত্রী বলেন, ‘‘টেক অফের পরেই বিমানটি বেশ জোরে কাঁপতে শুরু করে। তার পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যেই বিমানের ভিতরে ডান দিকের আলোগুলো নিভে যায় এবং আলোর ঝলকানি দেখা যায়। পোড়া গন্ধ আসতে থাকে। তার পর বিমান নামতেই আমরা বাইরে বেরিয়ে দৌড়ে পালাই।’’
যাত্রীরা পালিয়েছেন, ভুট্টা খেতের মধ্যে তখনও পড়ে রয়েছে বিমান। ছবি: রয়টার্স
আরও পডু়ন: ৭০ বছরে ৩৭০ ধারাকে কেন স্থায়ী করেননি? সাহস পাননি কেন? লালকেল্লা থেকে বিরোধীদের তোপ মোদীর
আরও পড়ুন: বিষ্ণুপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে টাটা সুমো, বেরোতে না পেরে জলে ডুবে মৃত ৭
এই ঘটনার পরেই রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যমে বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন পাইলট দামির ইউসুপভ। অনেকেরই মনে পড়ে যায়, ২০০৯ সালের একটি ঘটনা। ওই সময় পাখির ধাক্কায় ইঞ্জিনে যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য জরুরি পরিস্থিতিতে হাডসন নদীতে বিমান নামান এক পাইলট। সেই ঘটনার সঙ্গে অনেকেই মিল খুঁজে পেয়েছেন মস্কোর এই ঘটনার।